<p>টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বুধবার। উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে পুরো উপজেলায়। এখানে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ভোটারদের ধারণা। চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা উন্নয়নমূলক নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভোটারদের। একজন চেয়ার ধরে রাখতে অন্যরা চেয়ারে বসতে মরিয়া।</p> <p>চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী অলিদ ইসলাম (আনারস), উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউছ (মোটরসাইকেল), উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম (দোয়াত-কলম), উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন খান (হেলিকপ্টার) ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন লাভলু (ঘোড়া)।</p> <p>ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন- বাসাইল প্রেস ক্লাবের তিনবারের সাবেক সভাপতি এম শহীদুল ইসলাম (মাইক), সাইফুল ইসলাম (টিউবওয়েল), সাদিকুর রহমান খান (টিয়া পাখি), বিজয় আহমেদ (চশমা), নুরুল ইসলাম খান (উড়োজাহাজ), আতিকুর রহমান (বৈদ্যুতিক বাল্ব) ও মোকছেদ খলিফা (তালা)। </p> <p>মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মলি আক্তার (ফুটবল), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জবেদা বেগম (প্রজাপতি), রেখা বেগম (কলস) ও শাম্মী আক্তার মুক্তি (হাঁস)।</p> <p>জানা যায়, কাজী অলিদ ইসলাম তৃতীয়বার উপজেলা পরিষদের শীর্ষ পর্যায়ের চেয়ারে বসতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় তিনি দল থেকে বহিষ্কার হন। পরে তাকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। এরপর কাজী অলিদ ইসলাম ও হাজী মতিয়ার রহমান গাউছের পক্ষে প্রকাশ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এজন্য উপজেলা আওয়ামী লীগসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্ত শুরু হয়। এই গ্রুপিং প্রকাশ্যে রূপ নেয়। দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানও পৃথকভাবে পালন করা হচ্ছে। এক পক্ষ করছে কাজী অলিদ ইসলামের নেতৃত্বে আর অপর পক্ষ করছে হাজী মতিয়ার রহমান গাউছের নেতৃত্বে। কর্মী ও সমর্থকরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। এজন্য অনেক কর্মী-সমর্থকরা এবারের নির্বাচনে নীরব ভূমিকা পালন করছেন।</p> <p>আওয়ামী লীগের ভোট দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ায় কিছুটা বেকায়দা হতে পারে কাজী অলিদ ইসলাম ও হাজী মতিয়ার রহমান গাউছকে। সেই সুযোগ কাজে  লাগাতে চান কাজী শহিদুল ইসলাম। </p> <p>কাজী অলিদ ইসলাম জানান, ছাত্র রাজনীতি থেকে এ পর্যন্ত এসেছি। জনপ্রতিনিধি থেকে কাজ করেছি। পুরো উপজেলা জুড়ে আমার রয়েছে ব্যক্তিগত ইমেজ ও ‘ভোট ব্যাংক’। তাই আশা করি আমিই বিজয়ী হব।</p> <p>হাজী মতিয়ার রহমান গাউছ জানান, বয়সের কারণে এবারই তার শেষ নির্বাচন। এজন্য সাধারণ ভোটার ও কর্মী-সমর্থকরা তাকে জেতাতে খুব তোড়জোড় চালাচ্ছেন তার পক্ষে। তার অবস্থান দিন দিন আরো ভালো হয়েছে। বিজয়ের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী।</p> <p>কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষে বিএনপির ‘গোপন’ ভোট ও ব্যক্তি ইমেজের কারণে থাকা ভোট রয়েছে। কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকর্মীকে নির্বাচনী মাঠে কাজ করতে দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে এবারের নির্বাচনের সমীকরণ ভিন্ন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের গ্রুপিং ও আমার জনপ্রিয়তায় আমি জয়ী হব।</p> <p>এই তিনজন প্রার্থীই শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। ফলে তাদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ফলে নির্বাচনী যুদ্ধে অল্প ভোটের ব্যবধানে জয় হবে বিজয়ী প্রার্থীর। এমনটাই ধারণা করছেন সাধারণ ভোটার ও সচেতন মহল।</p> <p>পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে সুপরিচিত বাসাইল প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এম শহীদুল ইসলাম শক্ত অবস্থানে রয়েছেন।</p> <p>উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে বাসাইল উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫১ হাজার ৮৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৫ হাজার ৬৩১ জন ও নারী ভোটার ৭৬ হাজার ১৯৮ জন। এ ছাড়াও একজন হিজড়া ভোটার রয়েছে। এবার উপজেলার ৫৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।</p>