<p>গভীর রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ রেখা আক্তারকে (২০) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বামী-শ্বশুরসহ পরিবারের লোকজন। তবে রেখা মারা গেছেন জানতে পেরে পালিয়ে যান তাঁর স্বামী মো. তাইজুল ইসলাম (২৫)। এ সময় জরুরি বিভাগের লোকজন শ্বশুর আজিজুল ইসলামকে আটক করে পুলিশে দেয়। </p> <p>শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতালে।</p> <p>পুলিশ জানায়, নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বরুনাকান্দা গ্রামের তাইজুলের স্ত্রী রেখা হঠাত্ হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়েছেন বলে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। চিকিত্সক রেখাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।</p> <p>জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিত্সক নিশাত আনজুমান মিতু জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পান ওই নারী পথেই মারা গেছেন। হূদরোগ বা অন্য কোনো জটিল রোগ ছিল না। ধারণা করা হয়, নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হতে পারে। নিহতের গলায় ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন ছিল।</p> <p>নিহত রেখার মামা জয়নাল আবেদিন জানান, দিনমজুর আবুল হাসেমের মেয়ে রেখা ঢাকায় একটি বিস্কুট কম্পানিতে চাকরি করতেন। পরিচয়সূত্রে প্রায় দেড় বছর আগে বিয়ের কিছুদিন যেতেই দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন।</p> <p>মেয়েকে নির্যাতনের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে রেখার মা রমিজা খাতুন জানান, অন্তঃসত্ত্বা রেখার স্বামীকে অটোরিকশা কিনতে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু অটোরিকশা না কিনে সেই টাকা খরচ করে আবার টাকার জন্য চাপ দেয় তাইজুল। ফের টাকা দিতে না পারায় চলছিল নির্যাতন।</p> <p>হাসপাতাল থেকে রেখার লাশ উদ্ধার করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল সরকার। তিনি জানান, সুরতহাল রিপোর্টে দেখা গেছে নিহত রেখার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে।</p> <p>নান্দাইল থানার ওসি মো. আব্দুর মজিদ জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।</p>