<p>ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলস্টেশন এলাকায় অটোরিকশা থেকে চাঁদা আদায়ে বাধা দেওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ ইবনে মাসুদকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি ইবনে মাসুদ লাক্সুর বিরুদ্ধে।</p> <p>এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ সোমবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আখাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। <br /> এ সময় তাঁর সঙ্গে উপজেলার অন্য মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত অভিযোগের কপি আইনমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তাঁরা।</p> <p>লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দুপুরে আখাউড়া রেলস্টেশন এলাকায় কয়েকজন ভারতীয় যাত্রী স্থলবন্দরে যাওয়ার জন্য একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। এ সময় অটোরিকশার চালকের কাছে এক ব্যক্তি চাঁদা দাবি করে। চালক চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ার ভারতীয় যাত্রীদের ওই অটোরিকশা থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং অটোরিকশার চাবি নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনায় চাঁদা চাওয়া ব্যক্তি তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন ও আপত্তিকর আচরণ করেন। এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি ইবনে মাসুদকে ফোন করেন। ইবনে মাসুদ ৫-১০ মিনিটের মধ্যে ২০-২৫ জন লোক নিয়ে এসে আব্দুস সামাদকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এ সময় তাঁরা বীর মুক্তিযোদ্ধার গায়ে মুক্তিযোদ্ধা লোগোসংবলিত একটি কোট পিন খুলে ফেলার হুমকি দেন। আশপাশে থাকা লোকজন তাঁকে রক্ষা করেন। </p> <p>অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার ইজারার নাম করে ইবনে মাসুদসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে ছোট যানবাহন থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৫০ টাকা এবং বড় যানবাহন থেকে ৫০ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। পৌরসভার নিয়ম অনুসারে শুধু নির্ধারিত স্ট্যান্ড ব্যবহারকারী যানবাহন থেকে দৈনিক ১০ টাকা হারে টাকা তোলার কথা থাকলেও তার তোয়াক্কা করছেন না তাঁরা। শ্রমিক কল্যাণসহ নানা কাজের কথা বলে আখাউড়া পৌর এলাকার পাঁচ-ছয়টি স্পটে দাঁড়িয়ে প্রাইভেট গাড়ি ব্যতীত সব ধরনের যানবাহন থেকে চাঁদা নেওয়া হয়।</p> <p>ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে যা হয়েছে সেটা খুবই অন্যায় করা হয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় উল্টো তাঁকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।’</p> <p>এ বিষয়ে ইবনে মাসুদ বলেন, ‘স্টেশন এলাকার নিয়ম হলো সিরিয়াল অনুযায়ী সিএনজি অটোরিকশা চলবে। কিন্তু সেদিন সিরিয়াল ছাড়া একজন চালক তাঁর গাড়িতে যাত্রী ওঠালে এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে বিতণ্ডা হয়। পরে আমি এলে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে বিতণ্ডা হয়।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘ইজারা বাবদ পৌরসভাকে ৪০ লাখ টাকা দিতে হয়। আমরা রশিদ দিয়ে পৌরসভার ইজারার টাকা তুলি। শ্রমিকদের কল্যাণে এ টাকা ব্যয় করা হয়। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ একজনকে দিয়ে দুর্গাপুর এলাকায় যানবাহন থেকে টাকা তোলা শুরু করেন। এর প্রতিবাদ করায় মূলত তিনি এভাবে আমাদের পেছনে লেগেছেন। বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করব।’</p>