<p>নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘এর আগেও তো ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানকে আটকে দিয়েছি। জীবিত অবস্থায়ই তাকে আটকে দিয়েছি। সুতরাং রাতের বেলা তার ম্যুরাল ভাঙার প্রশ্নই আসে না। জিয়ার ম্যুরাল ভাঙতে চাইলে বহু আগেই ভাঙতাম। ওরা (বিএনপি) এটা করে একটা ইস্যু তৈরি করতে চায়, যেন এখানে মঞ্চটি না হয়।’</p> <p>শুক্রবার (৫ এপ্রিল) জুমার নামাজ পর নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। </p> <p>শামীম ওসমান বলেন, ‘২০১৪ সালেই এটা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজউক এটাকে ঝুকিপূর্ণ ভবন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ কারণেই এটা ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২ তারিখে আমাদের মিটিং ঘোষণা করা হয়েছে। ৪ তারিখে মিটিং হবে। সেখানে এমনি এটা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটা তো এমনিই ভাঙা হবে। ৩ তারিখ কেন ভাঙতে যাব? ওরা হয়তো এটাকে ভেঙেছে অথবা ভেঙে পড়েছে। ওরা এটা নিয়ে ইস্যু তৈরি করতে চায়। ওরা চায় না এখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রতিষ্ঠিত হোক। আমি তাদের বলতে চাই, আপনারা পারবেন না।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘গতকাল তারা নাকি আমাকে নিয়ে খুব অশ্লীল কথা বলেছে। সাংবাদিকরা বলছে, নারায়ণগঞ্জে কিছু ঘটলে বিএনপি ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আপনাকে দায়ী করে কেন? আওয়ামী লীগকে দায়ী করে না, আরো এমপি, মন্ত্রী, মেয়র আছে তাদের দায়ী করে না। আমি মনে করি তারা এ কারণেই দায়ী করে, কারণ ১৬ জুন আমাকে বোমা মেরে হত্যার চেষ্টা করেছিল। এরাই ক্ষমতায় আসার পর বায়তুল আমানে গুলি করা হয়েছে।’</p> <p>সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমরা বলেছি এখানে একটি মঞ্চ হবে। এখানে ১৯৪৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সকল ইতিহাস ধারণ করা হবে। এখানে বিএনপিরও গর্ববোধ করা উচিত। কারণ তাদের পূর্বপুরুষরাও এখানে অবদান রেখেছে। গতকাল দেখলাম আমাকে দায়ী করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল তো থাকারই কথা না। পঞ্চম সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে।’ </p> <p>শামীম ওসমান বলেন, ‘তারা নাকি ৭২ ঘণ্টার আরটিমেটাম দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের জনগণ ও আমি তাদের আলটিমেটামের শক্তি দেখতে চাই। ওরা খুব নোংরা ও অশ্লীল কথা বলেছে। এ সকল অশ্লীল কথা বলে আমার লোকজনকে ফোন করার আগেই তারা বলল, ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বললে সেন্ট্রালে আমাদের দাম বাড়ে। ভাই মানে আমি শামীম ওসমান। আমার বিরুদ্ধে কথা বলে বড় নেতা হতে পারলে হোক। আমার আপত্তি নেই। কারা এসব কথা বলেছে আমি তাও জানি না।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের কর্তব্য স্মৃতি রক্ষা করা। এখানে কেউ বাধা দিলে আমরা তাদের প্রতিহত করব, মানুষ প্রতিহত করবে। এর আগেও কিছু এক্সট্রিম বামপন্থী এটা নিয়ে কথা বলেছিল। আমি এখানে বসে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছি। তারা আর কোনো কথা বলেনি। এখানে জামায়াত ডান বা বাম নেই। এরা একটা গ্রুপ। ওরা নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করতে চায়।’</p> <p>সর্ষের ভেতর যেমন ভূত থাকে, প্রশাসনের ভেতরেও তেমন ভূত আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই অতি আওয়ামী প্রশাসনের কারণের গত ১০ বছরেও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। নারায়ণগঞ্জেই ইতিহাস বদলে দেওয়া হচ্ছিল। এগুলো দেখার পর আমরা সোচ্চার হই, এ বইগুলো কালেক্ট করি। আমি সংসদে ভাষণ দেওয়ার পরও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত দেওয়ার পরে আমরা যদি আমাদের অতীত প্রজন্মকে মূল্যায়ন না করি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের মূল্যায়ন করবে না। আমি বলেছিলাম এখানে ছয় দফা মঞ্চ করা হোক। এটা জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব। জেলা প্রশাসকরা দীর্ঘদিন দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। বর্তমান জেলা প্রশাসক এটা নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।’</p>