<p>পাকা-আধাপাকা বা টিনশেড ভবন মিলিয়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি ভবন। এসবই ছিল হলমার্ক গ্রুপের স্থাপনা। সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নে এই টিনশেড ভবনগুলোর টিন থেকে শুরু করে ভেতরের মেশিনারি, গ্রিলসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী চুরি ও লুট করে নেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। এখন স্থাপনাগুলো পরিত্যক্ত।</p> <p>গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকা ঘুরে এসব তথ্যই পাওয়া যায়। গিয়ে দেখা যায়, হলমার্ক ফ্যাশন, হলমার্ক ডিজাইন ওয়্যার, ওয়াল মাট ফ্যাশন, ইসলাম ফ্যাশন, ডন অ্যাপারেল, ফারহান ফ্যাশন, মাহমুদ অ্যাপারেল, হলমার্ক স্পিনিং, ববি ফ্যাশন, হলমার্ক ডেনিম কম্পোজিট, ববি ফ্ল্যাট বেড প্রিন্টিং, হলমার্ক অ্যাকসেসরিজ, হলমার্ক নিট কম্পোজিটসহ বেশির ভাগ কারখানার ভবনের সামনেই সাইনবোর্ড নেই। কোনটি কোন কারখানা ছিল তা বাইরে থেকে বোঝারও সুযোগ নেই। কিছু স্থাপনা ধসে পড়ছে, কোনোটার শেডও ভেঙে পড়েছে। ভেতরে থাকা যন্ত্রপাতি উধাও। একটি ভবনের নিচতলায় পার্কিংয়ে কয়েকটি গাড়ি, ধুলার আস্তরে ঢাকা। কয়েকজন আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন।</p> <p>স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলমার্ক প্রজেক্টের সব মালপত্র লুটপাটের পর অবশিষ্ট ছিল গরুর কয়েকটি খামার। এই শেডগুলোও বিক্রি করে দিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এখন সেখানে খোলা মাঠ। </p> <p>এলাকার বাসিন্দা অনিক আহমেদ বলেন, হলমার্ক গ্রুপের অর্থ কেলেঙ্কারির পর ৪৩টি কারখানার চাকা বন্ধ হয়ে যায়। দেশব্যাপী যখন হলমার্কের অর্থ কেলেঙ্কারি নিয়ে সমালোচনা চলছিল, এই সুযোগে এসব কারখানার কোটি কোটি টাকা মূল্যের মেশিনারিজ লুট হয়ে যায়। এসব লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ছিল হলমার্কের লোকজনও।</p> <p>স্বাক্ষর নকল করে জাল দলিল করে জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে হলমার্কের বিরুদ্ধে। পরে আদালতের মাধ্যমে পুলিশি তদন্তে মূল মালিক নিলুফা হক ফিরে পান মালিকানা।</p> <p>মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) অপূর্ব দাস বলেন, ‘আদালতে প্রমাণ হয়েছে যে, কোনো এক নারীকে নিলুফা সাজিয়ে ২০০৫ সালে এই জমিটি দলিল করে নেয় একটি চক্র। পরে ওই দলিল দেখিয়ে জমিটি কয়েকবার কেনাবেচা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত মালিক নিলুফা যেহেতু জমি বিক্রি করেননি সেহেতু তাঁদের দলিলটি ভুয়া।’ তেতুলঝোড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. আইয়ুব বলেন, ‘এখন তো সব এমনিতেই পড়ে আছে। আমরা ওই দিকে তেমন একটা যাইও না। এখানে ৪০-৫০টি স্থাপনা ছিল। এখন সব ভেঙেচুরে পড়ে আছে।’</p> <p>হলমার্কের সাভারের দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক আব্দুর রশিদকে হলমার্কে গিয়ে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি।</p>