<p>আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪ ও শহীদ দিবস উপলক্ষে মোটরচালিত রিকশাচালকদের নিয়ে ব্যতিক্রম এক আয়োজন করেছেন কুমিল্লার লালমাই উপজেলার দোশারীচোঁ গ্রামের সৈকত নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। এ বছর সে উপজেলার কনকশ্রী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। </p> <p>আজ বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিনি নিজ গ্রামের পাকা সড়ক দিয়ে চলাচল করা সব অটোরিকশা চালকদের থামিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বর্ণনা করেন। এসময় সব অটোতে একটি করে ছোট আকারের জাতীয় পতাকা বেঁধে দেন। তার ব্যতিক্রম এই আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করে সড়কে চলাচলকারী অটোরিকশাচালক, যাত্রীসহ এলাকাবাসী।</p> <p>দোশারীচোঁ গ্রামের বাসিন্দা রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, ‘সৈকত খুবই ভদ্র ও শান্ত ছেলে। শিক্ষার্থী হিসেবেও ভালো। ছোটকাল থেকেই সে খুবই ব্যতিক্রম। আজ সকালে দেখছি, সে অটোচালকদের থামিয়ে ভাষার কাহিনী শুনাচ্ছে।’</p> <p>অটোরিকশাচালক আবদুল মালেক বলেন, ‘না জানার কারণে আমরা ভাষা দিবস কি বুঝতাম না। বাংলা ভাষা কিভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে আজকে ছেলেটা আমাদের সব শুনিয়েছে। একটি জাতীয় পতাকাও আমার গাড়িতে বেঁধে দিয়েছে।’</p> <p>পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সৈকত আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার এই উদ্যোগের খবর শুনে আমিসহ এলাকাবাসী খুশি। আগামীতে সৈকতের এ ধরনের সৃজনশীল আয়োজনে আমি পাশে থাকব। ইনশাল্লাহ।’</p> <p>এসএসসি পরীক্ষার্থী সৈকত কালেরকণ্ঠকে বলেন, ‘আমার বাবাও একজন অটোরিকশাচালক। তিনিও ভাষা আন্দোলনের বিষয়ে সচেতন ছিলেন না। সে কারণে আমি সিদ্ধান্ত নিই এবছর আমার বাবাসহ সব অটোরিকশাচালকদের নিয়েই আমি মাতৃভাষা দিবস পালন করব। চার ঘণ্টায় আমি ২৩ জন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছি। তাদের সবাইকে ভাষা আন্দোলনের গল্প শুনিয়েছি এবং একটি করে জাতীয় পতাকা দিয়েছি। তবে অনেকেই আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিষয়ে আজকের আগে কিছু জানতেন না।</p> <p>লালমাই উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪ ও শহিদ দিবস পালন করা হয়েছে। একুশের প্রথম প্রহরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌমিতা দাশ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মাহফুজসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর, লালমাই প্রেস ক্লাব, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। তা ছাড়া সকালে উপজেলা মিলনায়তনে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়। জোহরের নামাজের পর উপজেলার সব মসজিদে ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।</p>