<p>টঙ্গীতে অবস্থিত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের মারুফ আহমেদ (১৬) নামে এক কিশোর বন্দি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। পরিবারের অভিযোগ নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।</p> <p>বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।</p> <p>নিহত মারুফ কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার মো. রফিক আহমদের ছেলে। সে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার দর্জিবাড়ি নামক স্থানে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করত।</p> <p>নিহত মারুফের বাবা মো. রফিক আহমেদ জানান, তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলায়। বর্তমানে খিলক্ষেত দর্জিবাড়ি এলাকায় পরিবারের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। মারুফ আগে কিছুদিন মাদরাসায় পড়াশোনা করলেও পরে পড়া বাদ দেয়। তিনি একজন দিনমজুর। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মারুফ ছিল সবার বড়।</p> <p>রফিক আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি খিলক্ষেত এলাকায় এক ঝালমুড়িওয়ালার সঙ্গে কয়েকজন ছেলের ঝগড়া হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল মারুফ। তখন খিলক্ষেত থানা পুলিশ দুই ছেলের সঙ্গে মারুফকেও ধরে নিয়ে যায়। ২৮ জানুয়ারি কোর্টে চালান করে দেয়। খবর পেয়ে থানায় গিয়ে জানতে পারি মারুফের নামে ডাকাতি মামলা হয়েছে। আদালত থেকে তাকে গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। গত ৮ থেকে ১০ দিন আগে মারুফের মা ইয়াসমিন বেগমকে নিয়ে টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে মারুফের সঙ্গে দেখা করতে যান তার বাবা। তখন মারুফ কান্না করে বলে বাবা আমি জীবনেও আর মারামারি, খারাপ কাজ করব না। তোমরা আমারে এখান থেকে নিয়া যাও। ওরা আমাকে বাথরুম, থালাবাসন ধোয়ায়। না ধুইলে আমারে অনেক মারধর করে।</p> <p>মারুফের বাবা আরো বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ফোন করে জানানো হয় মারুফ অসুস্থ। তাকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে ঢাকা মেডিক্যালে এসে দেখি আমার ছেলে অচেতন অবস্থায় আছে। তার সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারি নাই। মারুফের শরীরে, হাতের কনুইয়ে ও পিঠের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত দেখেছি। আমার ছেলেরে ওরা মারধর করেছে। মারধরের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। আমি আমার ছেলের মৃত্যুর বিচার চাই।</p> <p>শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সানারুল হক সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করেন, ওই কিশোরের ডান চোখের পাশে কালো দাগ ছিল। ডান ও বাম হাতের কনুইতে দাগ ছিল, দুই পায়ের বিভিন্ন স্থান ফুলা ছিল। আজ বৃহস্পতিবার মারুফের ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।</p> <p>প্রাথমিক তদন্তে এসআই সুরতহালে উল্লেখ করেন, গাজীপুর টঙ্গি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালক) তত্ত্বাবধায়ক মো. দেলোয়ার হোসেনের অপমৃত্যু মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, খিলক্ষেত থানার মামলা নম্বর ২৯(১)২৪, ২৮/১/২৪। উক্ত বন্দি গত ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পরে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে টঙ্গী শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৬০১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে সে মারা যায়।</p> <p>এ বিষয়ে টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, বন্দি মারুফ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ সত্য নয়।</p>