<p>নরসিংদীর মনোহরদীতে ঋণ দেওয়ার কথা বলে গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (জিডিএস) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। এতে মনোহরদী ও পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার তিন শতাধিক গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন বলে জানা গেছে।</p> <p>মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে টাকা ফেরত পেতে ওই এনজিও কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষা করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।</p> <p>জানা গেছে, এক মাস আগে মনোহরদী পৌর এলাকার হাররদিয়া বুরুজ শেখের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (জিডিএস) নামে একটি এনজিও কার্যালয় খোলা হয়। তারা শুকুন্দী, বালিয়াকান্দা, সুতালরীকান্দা, নারান্দী দিঘাকান্দী, হাররদিয়া, কাচিকাটা, বারুদিয়া, সাভারদিয়া, সনমানিয়া খিরাটী গ্রামের পোল্ট্রি খামার, মৎস খামার, অটোরিকশা চালক ও বিদেশগামী লোকজনদের টার্গেট করে ঋণ দিবেন বলে প্রলুব্ধ করেন।</p> <p>এক লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার জন্য গ্রাহককে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিতে হয়েছে। এভাবে গ্রাহকরা ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা করে জমা দিয়েছেন গ্রাহকরা। ঋণের আশায় গ্রামের তিন শতাধিক সহজ-সরল মানুষ এনজিওতে টাকা জমা রাখেন। কিন্তু রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হঠাৎ করে এনজিওর কার্যালয় বন্ধ করে উধাও হয়ে যান সেখানের লোকজন। কষ্টার্জিত টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।</p> <p>ভুক্তভোগী শুকুন্দী বালিয়াকান্দা গ্রামের বাছেদ প্রধান বলেন, ‘আমাকে দুই লাখ টাকা ঋণ দেবে বলে ২০ হাজার অগ্রীম নেয়। এখন তারা টাকা নিয়ে পালিয়েছে। অফিসের সবাই মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছে। তাদের কোনো খোঁজ পাই না। আমি আমার টাকা ফেরত চাই।’</p> <p>ফাইজ উদ্দিন ও মোস্তফা ফরাজী বলেন, ‘২ লাখ টাকা ঋণের আশায় ২০ হাজার টাকা করে জমা দিয়েছিলাম। টাকা দেওযার দিন এসে দেখি এনজিওর লোকজন পালিয়েছে। হাওলাত (ঋণ) করে টাকা দিয়েছিলাম তাদের, এখন এ টাকা কীভাবে পরিশোধ করব?’</p> <p>মনি আক্তার ও পারভীন সুলতানা বলেন, ‘দুইজনে ৩০ হাজার টাকা করে দিয়েছি, বিনিময়ে আমাদেরকে ৩ লাখ টাকা ঋণ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সুদ করে এনে এই টাকা দিয়েছি, এখন আমাদের উপায় কি হবে!’</p> <p>চর নারান্দী গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমি শ্রমিকের কাজ করি। আমাকে ৩ লাখ টাকা ঋণ দিবে বলে রবিবার সকালে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে। দুপুরের পর শুনতে পাই টাকা নিয়ে প্রতারকরা পালিয়েছে।’</p> <p>এ বিষয়ে কথা বলতে গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের (জিডিএস) মাঠ কর্মী আকলিমার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।</p> <p>মনোহরদী থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, তবে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>