<p style="text-align: justify;">বরগুনার বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নাজিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাজির শংকর চন্দ্র দেবনাথ সকল ফাইলপত্র ডিল করে থাকেন। এক্ষেত্রে নাজির শংকর ইউএনওকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব নিয়ে সেবা নিতে আসা মানুষের সঙ্গে লেনদেন করেন। শংকরকে টাকা দিলেই ফাইল প্রস্তুত হয়ে যায় মুর্হুতের মধ্যে।</p> <p style="text-align: justify;">সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেতাগী ইউএনও অফিসের নাজির শংকরের বাড়ি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেবনাথ পাড়ায়। স্থানীয় হওয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের ম্যানেজ করে দাপটের সঙ্গে চাকুরি করছেন তিনি। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের টিআর, কাবিটা, মসজিদ মন্দির সংস্কারের বরাদ্দ টাকা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন বরাদ্দের ফাইলগুলো ডিল করেন নাজির। এছাড়া ইউএনও'র সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ফাইলগুলো ডিল করেন শংকর। </p> <p style="text-align: justify;">এসব ফাইলে ইউএনওকে ঘুষ দিতে হবে বলে শংকর ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বেতাগী সদর ইউনিয়নের ২ ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুরা গ্রামের খান বাড়ি জামে মসজিদের সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দের জন্য গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রি. ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়। ইউএনও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বস্ত করেন। কিন্তু শংকর ওই মসজিদের আবেদনপত্র গোপন করে রাখেন। খান বাড়ি জামে মসজিদ কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘শংকরের কাছে খোঁজ নিতে গেলে কাগজপত্র তো খুঁজি পাই না। এরপর দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।'</p> <p style="text-align: justify;">গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ উপজেলার সহকারি রিটানিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ। সেই সূত্রে দাপ্তরিক সকল কাগজপত্র ডিল করেন নাজির শংকর। এ উপজেলা ৩৯ টি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং পোলিং কর্মকর্তাসহ মোট ৮৪৩ জন কর্মকর্তা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেন। এতে নাজির শংকর কমপক্ষে ২ শতাধিক কর্মকর্তা নিয়োগে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ঘুষ নিচ্ছেন।</p> <p style="text-align: justify;">এবিষয় বলইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারি শিক্ষক (বিজ্ঞান) বিভূতি চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘এ যাবত ১২ টি নির্বাচনে সহাকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছি। এ নির্বাচনে আমার দায়িত্ব পালনে নাম নেই কিন্তু যারা নাজির শংকরের সাথে ৫০০ টাকা এবং কারো কাছ থেকে ১০০০ টাকা দিয়ে যোগাযোগ করছে তাদের নাম নতুনভাবে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে।’ </p> <p style="text-align: justify;">বিএলবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক (ইংরেজি) রাজাংশু হালদার বলেন, ‘নাজির শংকর নির্বাচনের আগের দিন আমাকে ফোনে কথা বলে যে, আমাকে নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হবে তাড়াতাড়ি অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র ৫০০ টাকা খরচ নিয়ে যোগাযোগ করেন। এরপর শংকর আমাকে তিনঘণ্টা বসিয়ে রাখেন। পরে ১০০০ টাকার বিনিময় অন্য আরেকজন শিক্ষককে সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা করা হয়েছে।’</p> <p style="text-align: justify;">জানতে চাইলে অভিযুক্ত নাজির শংকর চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, সব ভিত্তিহীন। তবে মসজিদ মন্দিরের ফাইলগুলোতে কাজ করার পর খুশি করার জন্য বকশিষ হিসেবে যে টাকা দেয় তা ধর্মীয় কাজে খরচ করি।'</p> <p style="text-align: justify;">জানতে চাইলে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। এখনও পর্যন্ত শংকরের বিরুদ্ধে কেও লিখিত অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>