<p style="text-align: justify;">রংবেরঙের বাতিতে ঝকঝক করছে মন্দির প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন রঙিন কাপড় দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সুসজ্জিত দুটি গেট। অতিথিদের দেওয়া হয়েছে নিমন্ত্রণপত্র। অতিথি আপ্যায়নে থাকছে নিরামিষ খাবার। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে এই আয়োজন। তবে এই বিয়ে কোনো মানুষের নয়, বট আর পাকুড়গাছের বিয়ে দিতেই এত জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন। বিয়ে সম্পন্ন করতে ব্যাপক সাজসজ্জা ও আলপনা এঁকে প্রস্তুত করা হয়েছে ছাদনাতলা। বিয়ে পড়ানোর জন্য ঠিক করা হয়েছে চারজন পুরোহিত। </p> <p style="text-align: justify;">দিনাজপুর শহরের বাসুনিয়াপট্টি শ্রীশ্রী দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণে বট ও পাকুড়গাছের মধ্যে এ বিয়ের আয়োজন করেছে এলাকাবাসী ও ভক্তরা। </p> <p style="text-align: justify;">আয়োজকরা জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের অমঙ্গল থেকে রক্ষা করার বিশ্বাস থেকে বট ও পাকুড়ের বিয়ে। অর্থাৎ অশ্বত্থাদিবৃক্ষ বটেশ্বরি-পাকুড়েশ্বর প্রতিষ্ঠা করা। </p> <p style="text-align: justify;">অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী আগামীকাল বুধবার ভোর ৬টায় অধিবাস, সকাল ১০টায় নারায়ণপূজা, দুপুর দেড়টায় মধ্যাহ্ন প্রসাদ বিতরণ। এরপর দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিয়ে ও যজ্ঞানুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পরিবেশিত হবে কবিগান। কবিগান পরিবেশন করবেন চিরিরবন্দর উপজেলার বাবুল সরকার ও খানসামর চন্দনা রানী সরকার। </p> <p style="text-align: justify;">তবে আয়োজকরা জানান, আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গায়েহলুদের আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।</p> <p style="text-align: justify;">অতিথিদের দেওয়া নিমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বর বেশে: পাকুড়গাছ, পিতা: দিলীপ ঘোষ, মাতা: দিপ্তী ঘোষ, ঠিকানা: চকবাজার, সদর, দিনাজপুর। আর কনে সেজে: কুমারী বটগাছ, পিতা: মুন্না সাহা, মাতা: পূর্ণিমা সাহা, ঠিকানা: চকবাজার, সদর, দিনাজপুর।</p> <p style="text-align: justify;">আয়োজক দিলীপ ঘোষ বলেন, প্রকৃতির মঙ্গলের জন্য বট ও পাকুড়গাছের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী যেভাবে মানুষের বিয়ে হয়, সেভাবে বট-পাকুড়ের বিয়ে হবে। ইতিমধ্যে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়েছে। এর আগে এই এলাকায় এমন ব্যতিক্রমী বিয়ে হয়নি বলেও তিনি জানান।</p> <p style="text-align: justify;">মুন্না সাহার স্ত্রী পূর্ণিমা সাহা বলেন, ‘বটগাছ মেয়ে। আমি মেয়ের মা। ছেলে পাকুড়গাছের মা দিপ্তী ঘোষ আমরা প্রতিবেশী। বিয়ে ঘিরে আমরা আনন্দ-উল্লাস করছি।’</p> <p style="text-align: justify;">গাছের বিয়ের ব্যাপারে দিনাজপুর নাট্য সমিতির সভাপতি ও সাংবাদিক চিত্ত ঘোষ বলেন, প্রকৃতি ও ব্যক্তির মঙ্গল কামনায় বট-পাকুড়ের বিয়ে দেওয়া হয়। বাসুনিয়াপট্টি দুর্গামন্দিরে চকবাজার এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রকৃতির মঙ্গল কামনায় এমন বিয়ের আয়োজন করেছেন। বিয়ে ঘিরে আনন্দ-উৎসব হচ্ছে।</p> <p style="text-align: justify;">এদিকে জাঁকজমকপূর্ণ ব্যতিক্রমী এই বিয়ে দেখার অপেক্ষায় রয়েছে আশপাশের শতাধিক পরিবার ।</p>