<p>ডিম সুন্দরী, মিষ্টি কুলি, ঝিলমিল, ঝিনুক ও বাবুই-এগুলো পিঠার নাম। নামই বিচিত্র নয়, বাহারি এসব পিঠার স্বাদেও তাই। তার চেয়ে বিচিত্র ছিল স্টলগুলোর নাম।</p> <p>আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেকাসাহরায় এম এইচ গুলজার বাহার খানম (রহ.) স্কুল অব অ্যাক্সেলেন্সে ছিল পিঠা উৎসব। সেখানে গিয়ে দেখা গেল বিচিত্র নামে স্টলগুলো, আর প্রতিটি স্টলে নানা রঙের বাহারি সব পিঠাপুলি। পুরো প্রতিষ্ঠানজুড়ে পিঠাপুলির ম-ম গন্ধ।</p> <p>শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করে। সকাল ১০টায় ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন প্রবীণ শিক্ষক সালাউদ্দিন আহমেদ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ আজহারুল ইসলাম।</p> <p>প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ আজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলার গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন উৎসব ও ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে লালন করার জন্য তাগিদ দিতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।’</p> <p>মেলা ঘুরে দেখা গেছে, মোট ১৯টি স্টল রয়েছে। একটি স্টল প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের, নাম নান্দনিক পিঠাঘর। বাকি স্টলগুলো অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের। পিঠাপুলির স্বাদ নিতে ক্রেতা হিসেবে সেখানে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরাই নয়, সবার জন্যই ছিল উন্মুক্ত। ফলে প্রতিটি স্টলেই ছিল উপচে পড়া ভিড়।</p> <p>পিঠা উৎসব দেখতে সেখানে গিয়েছিলেন পাশের এলাকার সাতখামাইর উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি জাকির হোসেন। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘চমৎকার একটি উৎসব। আমি নিজেও কয়েকটি স্টল ঘুরে পিঠার স্বাদ নিয়েছি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন উৎসবের প্রয়োজন রয়েছে। এই উৎসব নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ধরে রাখার জন্য সহায়ক।’</p> <p>একটি স্টলে পিঠা বিক্রি করছে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাখা আক্তার, পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সহায়তা করছিলেন তার মা। রাখা আক্তার কালের কণ্ঠকে জানায়, রাত জেগে তার মা ১২ রকমের পিঠা তৈরি করে দিয়েছেন। সকালে সেগুলো স্টলে টেবিলে সাজিয়ে বিক্রি করছে সে। এরই মধ্যে সে সব পিঠার নামই জেনে গেছে।</p> <p>সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল আফরিন অর্ণি সহপাঠী মুকমিনা আক্তারকে নিয়ে স্টল দেয়। ২৫ রকমের পিঠাপুলি নিয়ে তাদের স্টলটি। জান্নাতুল আফরিন অণি জানায়, মায়ের সহযোগিতা নিয়ে ১২ রকমের পিঠা বানিয়েছে সে। একই কথা  বললো মুকমিনা আক্তারও। তারা দুজনই জানায়, আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় ৫০ ভাগ পিঠা বিক্রি হয়ে গেছে। স্টলে এভাবে পিঠা বিক্রি করে অনেক খুশি তারা।</p> <p>বাবার সঙ্গে মেলায় আসা তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদমান ও সাদিবা বাহারি সব পিঠা দেখে যারপরনাই খুশি। পিঠা উৎসব কেমন লাগছে, প্রশ্ন করতেই সাদমান বললো, ‘অনেক মজা হচ্ছে। কতো পিঠা দেখছি, অনেকগুলার নামও শিখে নিয়েছি।’</p> <p>প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ আজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’</p>