<p>প্রথমে মাত্র একটা সোনার মুদ্রা দেখিয়ে ব্যবসায়ীকে চমকে দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই ব্যক্তি যে আসলে প্রতারক তা আন্দাজ করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। সোনার মুদ্রাটা দেখার পর পরীক্ষায় আসল সোনার সত্যতা পাওয়ায় ওই রকম আরো ৬০০টি মুদ্রা কিনতে আগ্রহী হলেন তিনি। পরে বাকি কয়েনগুলোর জন্য অগ্রিম দিয়ে তিন লাখ টাকা খোয়ালেন এক ব্যক্তি। পরে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রতারকরা ফের বাকি তিন লাখ টাকা নিতে এসে ধরা খায় জনতার হাতে। পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিলে ওই দুই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। এমন ঘটনা ঘটে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে।</p> <p>প্রতারণার শিকার ব্যক্তি ওই গ্রামের মৃত আবু সিদ্দিকের ছেলে মো. কামরুল ইসলাম (৩৮)। তিনি জানান, গত ২৮ জানুয়ারি দুপুরে জনৈক আমির নামে এক ব্যক্তি সোহাগী বাজারে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে একটি লুঙ্গি ক্রয় করেন। একসময় আমির তাকে আলাদা করে নিয়ে কিছু কথা বলেন। আমির জানান, তিনি সিমেন্টের খালি বস্তা কেনেন ও তার আরেক ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ঈশ্বরগঞ্জে এক হিন্দুর বাড়িতে কাজ করার সময় মাটির নিচ থেকে ৬৭০টি সোনার কয়েন পান তারা। এ অবস্থায় প্রতিটি কয়েনের মূল্য চার হাজার টাকার ওপরে হবে। তিনি গরিব মানুষ, এতগুলো সোনা একবারে কোথাও নিয়ে গেলে অনেকেই সন্দেহ করবে। আমির প্রস্তাব দেন, যদি তিনি (কামরুল) ক্রয় করেন তাহলে প্রতিটি কয়েন এক হাজার টাকা করে বিক্রি করবেন। এতে ব্যবসায়ী কামরুল রাজি হলে তাকে পরীক্ষার জন্য একটি সোনার কয়েন দেন আমির। পরীক্ষায় কয়েনটি আসল সোনার বলে জানা যায়। এরপর সব কয়েন কিনতে রাজি হন কামরুল। পরে আমিরসহ (প্রতারক) আরো তিনজন এসে সোহাগী বড় মসজিদের পেছনে গিয়ে ৬০০ কয়েনের মূল্য ছয় লাখ ঠিক করেন। কামরুল তাদের তিন লাখ অগ্রিম দেন। বাকি টাকা দিলে সবগুলো কয়েন দিয়ে দেওয়া হবে মর্মে চুক্তি হয়। </p> <p>এ অবস্থায় ৭ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে পুরো কয়েন নিয়ে হাজির হওয়ার কথা ছিল। এ অবস্থায় ওই প্রতারকরা একটি বস্তায় করে কয়েন নিয়ে রেলস্টেশনের কাছে আসতেই তাদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে দুজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে জনতা। এ সময় অন্যরা দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটকদের একজন মো. আজাদ শেখ (৩২)। তিনি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার মহিষমারি গ্রামের আলম শেখের ছেলে। অপরজন একই উপজেলার গজারিয়া গ্রামের আলা মিয়ার ছেলে রবিউল শেখ (৩২)। তাদের সঙ্গে থাকা মূলহোতা আমির ছাড়াও অন্য একজন পালিয়ে যান।</p> <p>এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা মোস্তাছিনুর রহমান জানান, ভুক্তভোগীর দেওয়া লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিয়ে দুই প্রতারকের  রিমান্ড চেয়ে বুধবার আদালতে পাঠানো হবে।<br />  </p>