<p>ভোট আসলেই মাথা যেন খারাপ হয়ে যায় আব্দুল হাই মাস্টারের। আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রায় বছরখানেক বাকি এখনো। কিন্তু তার যেন আর তর সইছে না। তাই কুড়িগ্রাম-১ আসনে (ভূরুঙ্গামারী-নাগেশ্বরী উপজেলা) ভোটের দিনের অপেক্ষা না করে আগামী জাতীয় সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনের জন্য বাইসাইকেলে চড়ে নির্বাচনী এলাকা ঘুরে ঘুরে হ্যান্ডমাইকে ভোট চাইছেন তিনি। তার বাইসাইকেলে ঝুলানো একটি কাপড়ের ব্যাগ, তার ভিতরে থাকছে কাপড়-চোপড়সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। নির্বাচনী প্রচার করতে গিয়ে যেখানে রাত হচ্ছে সেখানেই কোনো বাড়িতে রাত্রিযাপন করছেন। পরদিন সেখান থেকে আবার প্রচারণা শুরু করছেন। এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। এলাকার লোকজন তাক 'ভোটপাগল আব্দুল হাই মাস্টার' বলেই ডাকেন।</p> <p>জানা গেছে, তিনি চারবার ইউপি চেয়ারম্যান পদে, চারবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এবং চারবার জাতীয় সংসদের সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন। এর মধ্যে একবার তিনি বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ২০০৯ সালে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয় জনসাধারণ নগদ টাকা, বাড়ি বাড়ি চাল ও মুড়ি তুলে তাকে সহায়তা করেছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর তিনি বেশিরভাগ সময় ড্রেন পরিষ্কার ও রাস্তা-ঘাট ঝাড়ু দিয়ে মানুষের আলোচনায় এসেছেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মাস্টার স্কুলশিক্ষক ছিলেন। গত বছরের অক্টোবর মাসে তিনি উপজেলার চর-ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।</p> <p>তার নিজ ইউনিয়ন বঙ্গ সোনাহাটের সোনাহাট বাজারে নির্বাচনী প্রচারণার সময় কথা হয় আব্দুল হাই মাস্টারের সাথে। তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাকের পার্টির প্রার্থী হিসাবে জাতীয় সংসদের ২৫ নম্বর (কুড়িগ্রাম-১) আসনে (নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। এবারও জাকের পার্টির প্রার্থী হিসাবে প্রচারণা চালাচ্ছি। জাকের পার্টির মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। নির্বাচন আমি করবোই কোনো বাধাই আমাকে আটকাতে পারবে না। চেয়ারম্যান হয়েছি উপজেলা চেয়ারম্যানও হয়েছি। বাকি আছে জাতীয় সংসদ সদস্য হওয়ার। তাই জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ার প্রবল ইচ্ছা এখন আমার। তিনি আরো বলেন, চলতি মাসের ১৮ জানুয়ারি থেকে প্রচারণার কাজ শুরু করেছি এবং প্রতিটি এলাকায় জনগণের বিপুল সাড়াও পাচ্ছি। আমি বুঝতে পারছি, আল্লাহ আমার ইচ্ছা পূরণ করবে এবং আগামী নির্বাচনে আমাকে এমপি বানাবে। </p> <p>আব্দুল হাইয়ের প্রচারণা শুনতে আসা সাইফুর রহমান(৩৪) শাহজাহান আলী, লিয়াকত আলী ও সবুর মিয়া বলেন, মানুষ আব্দুল হাইকে পাগল বলুক আর যাই বলুক, আমরা উপজেলা নির্বাচনের সময় যেমনভাবে তাকে ভোট দিয়েছি এবার সংসদ নির্বাচনে আমাদের এলাকার লোক হিসাবে আমরা তাকে ভোট দিয়ে জাতীয় সংসদে পাঠাব। যাতে তিনি এলাকার মানুষের সেবা করতে পারেন ও আমাদের মতো গরীব মানুষের মনের কথাগুলো মহান সংসদে উত্থাপন করে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেন। <br />  </p>