<p>‘আমাদের আব্বারে আইন্না দেন, আব্বা এহন কতা কয় না, আব্বা কতা না কইলে আমাদের রাইতে ঘুম অয় না। আমাদের আব্বায় সৌদি গেছে। আর আসে না ক্যান’―বাড়িতে কেউ এলে এভাবেই আহাজারি শুরু করে সৌদি আরবে মারা যাওয়া আউয়ালের অবুঝ শিশুরা।  </p> <p>পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের আগস্ট মাসে সৌদি আরবে পাড়ি জমান আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া গ্রামের খোরশেদ হাওলাদারের ছেলে আউয়াল হাওলাদার (৩৫)। সৌদি আরব থেকে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন তিনি। অসচ্ছল পরিবারটি ধীরে ধীরে সচ্ছলতার মুখ দেখা শুরু করে। কিন্তু ১০ সেপ্টেম্বর হার্ট অ্যাটাকে সৌদি আরবে মারা যান আউয়াল। পরে তার লাশ সৌদি আরবের আল-কাসিম জেলার গুরাইদার মারগাজি হাসপাতালে রেখে দেওয়া হয়। মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আউয়ালের পরিবার সৌদি আরবে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে জানানো হয় তার মরদেহ দেশে আনতে হলে দুই থেকে তিন লাখ টাকা দিতে হবে। কিন্তু অসহায় ওই দরিদ্র পরিবারটির পক্ষে এত টাকা বহন করা সম্ভব নয়। টাকার অভাবে আউয়ালের মরদেহ দেশে আনতে পারছে না তার পরিবার।</p> <p>এদিকে বাবাকে শেষবারের মতো দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে আউয়ালের সন্তানরা।</p> <p>অন্যদিকে আউয়ালের মৃত্যুতে তার পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে স্বামীর ছবি আঁকড়ে কেঁদে দিন পার করছেন স্ত্রী খাদিজা (৩০)।</p> <p>আউয়ালের পিতা খোরশেদ হাওলাদার বলেন, ‘ধার-দেনা করে এক বছর আগে ছেলেকে সৌদি আরব পাঠাই। কিন্তু এক বছরের মাথায় ছেলেটা মারা গেল। এখন আমি কিছুই চাই না, আমি শুধু আমার ছেলের লাশটা চাই। এই বৃদ্ধ বয়সে একটু সান্ত্বনা পাইতাম। নিজ হাতে মসজিদের পাশে ছেলেকে শায়িত করতে চাই।’ বিদেশ থেকে ছেলের লাশটা আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।</p> <p>আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস এম সাদিক তানভীর মুঠোফোনে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই অসহায় পরিবারটিকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে। </p>