শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে জ্বালানি তেলের বর্ধিত নতুন মূল্য কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও তার দুই ঘণ্টা আগে থেকেই পঞ্চগড়ের বেশিরভাগ ফিলিং স্টেশনগুলোতে তেল বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তেলের মজুদ থাকলেও সব কার্যক্রম বন্ধ রেখে ফিলিং স্টেশনের মালিক ও কর্মচারীরা সটকে পড়েন।
এদিকে তেলের দাম বৃদ্ধির খবর শুনে পঞ্চগড় জেলা শহরের করতোয়া, কাঞ্চনজঙ্ঘা, এসবিসহ সব ফিলিং স্টেশনগুলোতে তেল নিতে গাড়ি চালকদের ভিড় মারাত্মক আকার ধারণ করে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেই তাদের ভাগ্যে মিলেনি কোন তেল।
বিজ্ঞাপন
মোহাম্মদ লিটন ইসলাম নামে মোটরসাইকেল চালক বলেন, আমি তিন ঘন্টা ধরে তেল নেওয়ার জন্য এই ফিলিং স্টেশন থেকে ওই ফিলিং স্টেশন ঘুরছি। এখনো তেল পাইনি। রাত ১০টা থেকেই তারা তেল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
জাহিদ হোসেন নামে এক গাড়ি চালক বলেন, সব ফিলিং স্টেশনে তেল মজুদ থাকলেও তারা তেল বিক্রি বন্ধ করে সটকে পড়েছে। তাদের যে তেল মজুদ রয়েছে সেটি তো আগের দামেই কেনা তাহলে তারা তা আগেই দামে বিক্রি করবে না কেন?
ইউসুফ হোসেন নামে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন, আমি দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি। ফিলিং স্টেশনে কোনো লোক নেই। তেল না নিলে আমি বাইক চালাতে পারব না। নতুন মূল্যে হলেও আমাকে তেল নিতে হবে। কিন্তু সেই সুযোগও আমরা পাচ্ছি না।
শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকার ফিলিং স্টেশনের মালিকদের অতিরিক্ত মুনাফা কামানোর সুযোগ করে দিল। প্রতি লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছে। এটা আমাদের উপর জুলুম করা হচ্ছে। সরকারের উচিত সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে তেলের দাম কমানো।
আবুল হোসেন নামে এক গাড়ি চালক বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে সব কিছুতেই এর প্রভাব পড়বে। আর সবকিছুতেই চওড়া দরে মাশুল দিতে হবে সাধারণ মানুষকে।
ধাক্কামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ফিলিং স্টেশন মালিকদের সঙ্গে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনেরও চুক্তি হয়েছে। তারা রাত ১১টায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে তাদের লাভ করার সুযোগ করে দিয়েছে। বিষয়গুলো তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ফিলিং স্টেশনগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে পুলিশ ফিলিং স্টেশনগুলো তদারকি করছে। কোনো ফিলিং স্টেশনে কি পরিমাণ তেল মজুদ রয়েছে তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।