ক্লাস নাইনে পড়ে মিম (১৫)। গ্রামের একটি বিদ্যালয় নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে সে। বাবার তিন মেয়ের মধ্যে সে সবার বড়। তাই তার ইচ্ছা পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং বাবার ছেলে না থাকার অভাব ঘুচাবে।
বিজ্ঞাপন
এদিন বিয়ের অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান মিমের বাড়িতে অবস্থান করে তার বাবাকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত মিমকে বিয়ে দেবেন না মর্মে মুচলেকা নেন পরিবারের কাছ থেকে। মিমের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরভাঙ্গুড়া গ্রামে।
সূত্র জানায়, মিমের বাবা ঝুট কাপড়ের ব্যবসা করেন। পরিবারে অর্থনৈতিক অভাব না থাকলেও তার রয়েছে শিক্ষার অভাব। তাই সংসারে পুত্রসন্তান না থাকায় তিনি অসন্তুষ্ট। এতে বড় মেয়ে মিম মেধাবী ছাত্রী হওয়া সত্ত্বেও বিয়ে ঠিক করেন বাবা মিলন হোসেন। বিয়েতে মেয়ে ও তার স্ত্রীর সম্মতি ছিল না। এরপর শুক্রবার দুপুরে একই উপজেলার রাঙ্গালিয়া গ্রাম থেকে বরপক্ষের উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই একটি বিশেষ মাধ্যমে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিমের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বিয়ে বন্ধ করে আইনগত ব্যবস্থা নেন। এদিকে বরপক্ষের লোকজন চরভাঙ্গুড়া গ্রামে প্রবেশ করলেও প্রশাসনের উপস্থিতির খবর পেয়ে বিয়েবাড়ি না গিয়ে ফিরে যায়।
মিম জানায়, পড়াশোনা করতে চাই। পড়াশোনা শেষে চাকরি করে পরিবারের পাশে থাকতে চাই। ইউএনও স্যারের হস্তক্ষেপে আমার বাল্যবিয়ে ভেঙে যাওয়ায় সেই চাওয়াটা পূরণ করার স্বপ্ন দেখছি এখন। স্যারকে (ইউএনও) অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ইউএনও নাহিদ হাসান খান বলেন, পিতার ভুল সিদ্ধান্তের বলি হতে পারে না দেশের আগামী দিনের একজন নাগরিক। তাই বাল্যবিয়ে বন্ধ করে ওই শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ করে দেওয়া হলো।