ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে পরিবহনের সংখ্যা বাড়ছে। এতে ফিটনেসবিহীন গাড়ি মহাসড়কে বিকল হয়ে ও অতিরিক্ত যানের চাপে বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুরের পর থেকে মহাসড়ক স্বাভাবিক হয়ে যায়। এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতুতে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই কোটি ৭২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা টোল আদায় হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাড় থেকে রাবনা বাইপাস পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কে এই যানজটের ফলে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।
সরেজমিনে মহাসড়কের উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সকালে দেখা যায়, গাড়ির চাপ রয়েছে। মাঝেমধ্যে ধীরগতিতে চলছে। দুপুর ১২টার পর থেকে মহাসড়ক একেবারে স্বাভাবিক হয়। অনেকে পিক-আপ ভ্যান এবং ট্রাকের ছাদে করে রোদে পুড়ে বাড়ি ফিরছেন।
গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গায় আসা রাসেল মিয়া বলেন মহাসড়ক স্বাভাবিক। এক ঘণ্টার মধ্যেই এলেঙ্গা পৌঁছেছি। তবে যানবাহনের সংখ্যা কম।
এদিকে উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা গরুবাহী ট্রাক ব্যতীত যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো সেতু গোলচত্বর হয়ে ভূঞাপুর-তারাকান্দি দিয়ে ঘুরে এলেঙ্গা মহাসড়কে প্রবেশ করছে। এতে ওই সড়কেও কিছু কিছু এলাকায় পরিবহনে ধীরগতি রয়েছে। তবে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে।
যানজট নিরসনে পুলিশ এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক একমুখী করেছে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন এলেঙ্গা থেকে সেতুর দিকে যাচ্ছে। অপরদিকে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী যানবাহন সেতু পার হয়ে ভূঞাপুর সড়ক হয়ে এলেঙ্গা হয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। তবে উত্তরবঙ্গ থেকে গরুবাহী ট্রাক একমুখী সড়কের আওতার বাইরে রয়েছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, রাতের দিকে মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পাড় হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত তিনটা গাড়ি বিকল হওয়ায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন গাড়ি চলাচল ধীরগতি রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, ফিটনেসবিহীন বিকল হওয়া কয়েকটি যানবাহন রেকার দিয়ে সরাতে সময় লেগেছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক হবে।
বঙ্গবন্ধু সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতু দিয়ে ৩৪ হাজার ৪০৭টি ছোট-বড় যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৭২ লাখ ৩৩ হাজার ৫০ টাকা।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার এ পথে ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০/২১ হাজার গাড়ি পারাপার হয়। কিন্তু ঈদে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫/৩৬ হাজারে। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটারে দুই লেনের সড়ক থাকায় প্রায় যানজটের সৃষ্টি হয়। কিন্তু গত ঈদুল ফিতরে পুলিশের বিশেষ কয়েকটি সিদ্ধান্ত এবং প্রচেষ্টার ফলে মহাসড়ক যানজটমুক্ত থাকে। ফলে ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতে বাড়ি ফেরে মানুষ।