আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতু।
ঢাকায় র্যাবের প্রেস ব্রিফিং শেষে শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুকে (১৯) আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে আশুলিয়া থানার পুলিশ আসামি জিতুর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার এসআই এমদাদুল হক বলেন, অধিকতর তদন্তের স্বর্থে আসামিকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলায় আসামির বয়স ১৬ দেখানো হলেও আসামির শিক্ষাগত সনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৯ বছর হিসাবেই উল্লেখ করে আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরো বলেন, যেহেতু শিক্ষক মারা যাওয়া আগের দিন তার ভাই মামলা করেছেন তাই সেখানে হত্যার চেষ্টা, মারধর ও জখমসহ অন্যান্য ধারা। শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা যাওয়ার পর নতুন ধারা মামলায় সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে শিক্ষক উৎপলকে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে আঘাত করে শিক্ষার্থী জিতু। পরে শিক্ষককে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সোমবার (২৭ জুন) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় রবিবার আশুলিয়া থানায় নিহত শিক্ষকের ভাই বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় জিতুকে প্রধান আসামি করা হয়। মঙ্গলবার রাতে (২৮ জুন) কুষ্টিয়া থেকে জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাজি এবং পরদিন রাতে গাজীপুর থেকে জিতুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর র্যাব বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলন করে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জিতু জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে ওই স্কুলে এক ছাত্রীর সঙ্গে ঘোরাফেরা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে শিক্ষক উৎপল কুমার তাকে প্রেষণা দেন। এ ঘটনায় সে তার শিক্ষকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ছাত্রীর নিকট নিজের হিরোইজম প্রদর্শন করার জন্য শিক্ষকের ওপর হামলা করে।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সে ২৫ জুন একটি ক্রিকেট খেলার স্টাম্প স্কুলে নিয়ে আসে এবং তা শ্রেণিকক্ষের পেছনে লুকিয়ে রাখে। এরপর তার শিক্ষককে আঘাত করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে। পরে কলেজ মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালে শিক্ষক উৎপল কুমারকে মাঠের এক কোণে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অতর্কিতভাবে আঘাত করতে থাকে। জিতু তার শিক্ষককে প্রথমে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করে এবং পরে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে।
তিনি আরো বলেন, 'স্কুল থেকে তার বিভিন্ন সনদপত্র আমরা সংগ্রহ করেছি। সেখানে আমরা দেখতে পেয়েছি তার বয়স ১৯ বছর। যেহেতু মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে ১৬ বছর। সেই প্রেক্ষিতে আমরা তাকে উপস্থাপন করেছি। '
র্যাব আরো জানায়, জিতু এলাকায় জিতু দাদা নামে পরিচিত ছিল। স্কুলে সে বেপোরায়া চলাফেরা করত। বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত। শৃঙ্খলা কমিটি বিভিন্ন সময় অভিযোগ পেয়ে জিতুকে সতর্ক করেছিল। এসব কারণেও সে ওই শিক্ষকের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।