কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রায় চার লাখ গবাদি পশু প্রস্তুত করেছেন কৃষক ও খামারিরা। তবে হাটগুলো এখনো জমে ওঠেনি। গো-খাদ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় গবাদি পশু পালনে খরচ বেশি হয়েছে। এ অবস্থায় সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষক ও খামারিরা।
বিজ্ঞাপন
সদর উপজেলার পশ্চিম দিয়ার পাচিল গ্রামের প্রান্তিক খামারি নজরুল ইসলাম বলেন, 'দুটি গরু পালন করেছি। বন্যার কারণে এখনো হাটগুলো জমেনি। তাই গরু হাটে নিইনি। কয়েকজন ব্যাপারি বাড়িতে এসেছিল। কিন্তু গরুর ওজন ও খাওয়ানোর খরচের তুলনায় দাম কম বলায় বিক্রি করিনি। '
সদর উপজেলা শিয়ালকোল ইউনিয়নের বড় হামকুড়িয়া গ্রামের খামারি শাহ আলম, শিলন্দা গ্রামের নাসির উদ্দিন, আব্দুল মান্নান সেখ ও প্রান্তিক খামারি জিন্নাহ সেখ বলেন, প্রতিবছর ঈদের আগে পাইকাররা বাড়িতে এসেই গরু কিনে নিয়ে যেত। এ বছর এখনো পাইকারদের দেখা নেই। গরু পালনে এবার খরচও বেশি হয়েছে। তাই গরু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছি।
সদর উপজেলার কান্দাপাড়ার তালুকদার ডেইরি ফার্ম লিমিটেডের ব্যবস্থাপক জান্নাতুল মারুফ বলেন, 'গত বছর কোরবানি ঈদে ৬০টি বড় আকারের গরু ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল। মাত্র পাঁচটি গরু বিক্রি হলেও, উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় বাকিগুলো ফেরত নিয়ে আসা হয়। ওই গরুগুলোই খামারে থেকে আরো বড় হয়েছে। গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে খরচ আরো বেড়েছে। এখনো পাইকাররা খামারে আসেনি, হাটগুলোও জমেনি। এ অবস্থায় গরুগুলোর উপযুক্ত দাম পাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি। এভাবে চললে আমাদের খামার বন্ধ করে দিতে হবে।
সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কান্দাপাড়া হাটের ইজারাদার ইউসুফ আলী জানান, প্রতি বৃহস্পতিবার এখানে হাট বসে। ক্রেতা-বিক্রেতা না আসায় এখনো কোরবানির পশুর হাট জমেনি।
শাহজাদপুরের ঐতিহ্যবাহী তালগাছি হাটের ইজারাদার সাইফুল ইসলাম জানান, বাইরের ব্যাপারিরা না আসায় এখনো কোরবানির পশুর হাট জমেনি। করোনা-পরবর্তী সময়ে স্থানীয় মানুষের হাতে টাকা কম, তাই তারাও হাটে আসছে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার জানান, এ বছর জেলার ৯টি উপজেলায় কোরবানির জন্য বিভিন্ন জাতের তিন লাখ ৯১ হাজার গরু, মহিষ ও ছাগল প্রস্তুত হয়েছে। জেলার চাহিদা পৌনে তিন লাখ। বাকিগুলো রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার হাটে নেবেন কৃষক ও খামারি। গত বছর প্রায় ৩০ হাজার গরু অবিক্রীত ছিল। এবার আশা করছি গতবারের মতো হবে না। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনলাইনেও প্রচার চালানো হচ্ছে।