সাভারের আশুলিয়ায় উৎপল কুমার সরকার (৩৫) নামের এক শিক্ষককে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে ওই স্কুলেরই দশম শ্রেণির এক ছাত্র। মুমূর্ষু অবস্থায় ওই শিক্ষক হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এ ঘটনায় রবিবার (২৬ জুন) সকালে আশুলিয়া থানায় আহত শিক্ষকের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। বিদ্যালয়ের এক কর্মী বলেন, ‘হামলা পর বুঝতে পেরেছি ওই ছাত্র আগেই বিদ্যুতের মেইন সুইস অফ করে নিয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
এর আগে শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ২টার দিকে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠ প্রাঙ্গণেই শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ওই ছাত্র। অভিযুক্ত ছাত্রের নাম আশরাফুল ইসলাম জিতু। সে চিত্রশালাই এলাকার উজ্জ্বল হাজির ছেলে এবং এই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত।
হামলার পর আহত শিক্ষককে স্থানীয় নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি।
বিদ্যালয়ের এক কর্মী বলেন, ‘হামলার পর বুঝতে পেরেছি ওই ছাত্র আগেই বিদ্যুতের মেইন সুইস অফ করে নিয়েছিল। যাতে সিসি ক্যামেরায় এই ভিডিও দেখা না যায়। ’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, 'আমাদের স্কুলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। দুপুরে মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক উৎপলকে হঠাৎ করে এসে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে ওই ছাত্র। স্টাম্পের আঘাতে শিক্ষকের মাথায় জখম হয়। উৎপল স্যার স্কুলের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি। তিনি ছাত্রদের বিভিন্ন সময় চুল কাটতে বলাসহ বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করেন। বিভিন্ন অপরাধের বিচারও করেন তিনি। হয়তো কোনো কারণে শিক্ষকের ওপর ওই ছাত্রের ক্ষোভ ছিল। '
আরো জানা যায়, ওই ছাত্রটি পড়াশোনায় ভালো না। চলাফেরা উচ্ছৃঙ্খল। পাশের স্কুল থেকে এই স্কুলে নবম শ্রেণিতে এসে ভর্তি হয়েছিল।
আহত শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বলেন, 'চিকিৎসকরা বলেছেন উৎপলের অবস্থা ভালো না। তাকে মাথায় ও পেটে গুরুতরভাবে আঘাত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, মেয়েদের টিজিংসহ নানা উচ্ছৃঙ্খলা করত ওই ছাত্র। শাসন করলে সেই ক্ষোভ থেকে শিক্ষকের ওপর এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই মানা যায় না। তার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি। '
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার এসআই এমদাদুল হক বলেন, অভিযুক্ত জিতুসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জিতুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।