করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হতেই আবারও শুরু হয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যে উল্লাপাড়ার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বেতবাড়ী ও পূর্ব সাতবাড়িয়া গ্রামের বেশ কিছু স্থান ভেঙে গেছে। এই উপজেলার পূর্ব সাতবাড়িয়া গ্রামের অন্তত ২০টি বাড়ি এখন ভাঙনের মুখে রয়েছে। ভেঙে গেছে প্রায় ২০ বিঘা আবাদি জমি।
বিজ্ঞাপন
বেতবাড়ী গ্রামের ফুলবক্স সরদার, জাহাঙ্গীর হোসেন, আশরাফুল ইসলাম, রুবেল মন্ডল, আলাউদ্দিন, শফিকুল ইসলাম জানান, গত বছর করতোয়া নদীর ভাঙনে তাদের প্রায় ২০ বিঘা আবাদি জমি নদীতে চলে গেছে। এবার বর্ষার আগেই আবারও শুরু হয়েছে ভাঙন। এই গ্রামের লোকজন স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি দাবি জানিয়েছে।
পূর্ব সাতবাড়িয়া গ্রামের শফি মিয়া, ছাখাওয়াত আলী, তাহের হোসেন ও জামাল হোসেন জানান, এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই করতোয়ায় পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। বর্তমানে নদী তাদের বাড়ির ভিটায় আঘাত হেনেছে। হুমকির মুখে পড়েছে তাদের ঘরবাড়ি। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে নদীতে। এ অবস্থায় চরম অতঙ্ক নিয়ে রাত কাটাচ্ছেন তারা। গ্রামের লোকজন নদীতে গাছের ডালপালা ও জঙ্গল ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করলেও তা কাজে আসছে না। বিষয়টি তারা পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন।
ছাখাওয়াত হোসেন আরো জানান, গত বছর তার বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি নদীর পার থেকে ২০ ফুট দূরে আবার নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন। এ বছর এ বাড়িটিও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
এ ছাড়া এর আগে বর্ষা মৌসুমে করতোয়ার ভাঙনে তাদের গ্রামের আরো ১০টি বাড়ি ভেঙে গেছে। অনেক পরিবার বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে অন্যত্র সরে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর তাদের গ্রামে করতোয়ার ভাঙন রোধে প্রচুর জিও ব্যাগ ফেলেছিল। এতে ভাঙন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। এ বছর আবারও শুরু হয়েছে নদীর ভাঙন। এতে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এই গ্রামের লোকজন।
পঞ্চক্রোশী ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজ জানান, বেতবাড়ী ও পূর্ব সাতবাড়িয়া করতোয়ার ভাঙন রোধের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিরাজগঞ্জ জেলা অফিসকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জ জেলা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন জানান, উল্লিখিত দুটি গ্রামে নতুন করে করতোয়ার ভাঙন শুরু হওয়ার বিষয়টি তারা অবহিত হয়েছেন। অবিলম্বে ভাঙনস্থলে তদন্তদল পাঠিয়ে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাসির উদ্দিন আরো জানান, গত বছর উল্লিখিত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করেছিল। তবে এসব এলাকায় স্থায়ীভাবে নদীভাঙন রোধের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে।