বাজারের চেয়ে কম মূল্যে পণ্য দিচ্ছে ময়মনসিংহের নান্দাইলের ইছহাক হেরিটেজ। সেই পণ্য লাইন ধরে কিনছেন কার্ডধারীরা। গতকাল বিকেলে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ
হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরের চাল দেওয়া আপাতত বন্ধ। বন্ধ রয়েছে টিসিবির পণ্য বিপণনও। ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে দরিদ্ররা অসহায়। আর এ অবস্থায় ময়মনসিংহের নান্দাইলের বিত্তবান পরিবারের ১০ ভাই-বোনের একটি উদ্যোগ সবার নজর কেড়েছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাজারে বিআর ২৮ চালের কেজি ৪৫ টাকা। এই চাল কেনা যাবে ৩৫ টাকায়। আর মোটা ডালের কেজি ১১০। সেই ডাল কেনা যাবে ৭০ টাকায়। একটি পরিবার ১০ দিন পর পর পাঁচ কেজি চাল ও আধাকেজি ডাল কিনতে পারবে। এক হাজার ৫০০ পরিবার নিয়মিত এই সুবিধা পাবে। চাল-ডালে শুরু হলেও ১০ দিন পর এর সঙ্গে যুক্ত হবে চিনি, সয়াবিন তেল ও লবণ। এরই মধ্যে এক হাজার ৫০০ ব্যক্তিকে কার্ড দেওয়া হয়েছে।
গত শনিবার নান্দাইল পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইছহাক শপিং সেন্টারে ‘ইছহাক হেরিটেজ মূল্যছাড়ের দোকানে’র উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রথম দিন ২২০ জনকে কম দামে চাল-ডাল দেওয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার ৩৩০ জন পণ্য কিনেছে। পণ্য কেনার লাইনে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের মধ্যে যেমন হতদরিদ্র ছিল, তেমনি নিম্নমধ্যবিত্তও ছিল।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানায়, নান্দাইল পৌরসভার চারিআনিপাড়ার বাসিন্দা মরহুম এ এফ এম ইছহাক। তাঁর ১০ ছেলে মেয়ে। তাঁরা প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ইছহাক হেরিটেজ’। সেই প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই সংগঠনের চেয়ারম্যান সৌদিপ্রবাসী এ এফ এম রফিকুল ইসলাম।
দোকান উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন হেরিটেজের নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন, পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ কে এম শামসুল ইসলাম শামস ও সহপরিচালক এ এফ এম আজিজুল ইসলাম পিকুল।
মো. আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে দরিদ্র মানুষকে সহায়তা করার জন্য বাজারের চেয়ে কম মূল্যে পাঁচ কেজি চাল ও আধাকেজি ডাল দেওয়া হচ্ছে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ঘুরে এক হাজার ৫০০ দরিদ্রের তালিকা করে তাদের হাতে মূল্যছাড়ের কার্ড পৌঁছানো হয়েছে। ওই কার্ড দেখিয়ে তারা প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য কিনবে। একজন ভোক্তা ১০ দিন পর পর এই সুবিধা পাবে। ’
গতকাল পণ্য কেনা নান্দাইল পৌর বাজারের বাসিন্দা গুজিয়া রাজবর (৫০) বলেন, ‘বাজারে জিনিসের দামের লাইগ্যা মন চাইলেও অনেক কিছু কিনতাম পারি না। অহন এইহানো কম দামে কিনন যাইতাছে। ’
নান্দাইলের ইউএনও আবুল মনসুর বলেন, ‘এটা ব্যতিক্রমী মহৎ উদ্যোগ। এভাবে সব বিত্তবানের এগিয়ে আসা দরকার। ’