ছবি : কালের কণ্ঠ
খুলনায় ছাত্রলীগ, বিএনপি-ছাত্রদল ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ ঘটনায় বিএনপি, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়, কে ডি ঘোষ রোড ও থানার মোড় এলাকায় দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সংখ্যক টিয়াল শেল নিক্ষেপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল ৪টার দিকে শহীদ হাদিস পার্কসংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগ প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করে। অন্যদিকে থানা মোড়ে কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়াকে কটূক্তির প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করে নগর বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সমাবেশ শেষ করে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দলীয় কার্যালয়ে ফেরার সময় পিকচার প্যালেস মোড়ে ছাত্রদলের কতিপয় নেতাকর্মী হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে পিকচার প্যালেস মোড়, থানার মোড় এলাকা দিয়ে বিএনপির সমাবেশে হামলা চালায়।
ছাত্রলীগ, বিএনপি-ছাত্রদল ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলায় বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। বিএনপির সমাবেশের শত শত চেয়ার ভাঙচুর হয়েছে। বিএনপি-ছাত্রদল নেতাকর্মীরা পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড টিয়াল শেল নিক্ষেপ করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম তুহিন, মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রেহেনা ঈসা, সাবেক কাউন্সিলর আনজিরা খাতুন, কাওসারী জাহান মঞ্জু, মুন্নীজামানসহ ১৭ জনকে আটক করেছে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান আল মামুন জানান, নগরীর দুটি সমাবেশ নিয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। কিন্তু ছাত্রদলের কতিপয় নেতাকর্মী ছাত্রলীগের মিছিলে হামলা চালালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। তবে এ মুহূর্তে কতজন আটক রয়েছেন, তা জানানো সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে ছাত্রলীগ এ ঘটনার জন্য বিএনপি ও ছাত্রদলকে দায়ী করেছে। সংগঠনের জেলা সভাপতি পারভেজ আলম সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দলীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, বিএনপি-ছাত্রদল অস্ত্র, ককটেল নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে কমপক্ষে ২০-২২ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তাদের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।