নাটোরে দুজন চিকিৎসকসহ পাঁচজনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৫ মে) দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলজার রহমান এ আদেশ দেন। আদালত চলাকালে এজলাসে বসে বিচারক নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মুঠোফোনে এ আদেশ দেন।
অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ অক্টোবর নাটোর জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অজিত কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে নাটোর সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সুমনা সরকার (৪৫) তার বোন একই হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাগরিকা সরকার বাবা সুনীতি সরকারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
হত্যার প্রস্তুতি নেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা এই মামলাটি দুই দফা তদন্ত হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালত মামলার আসামি নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমনা সরকার, (৪৫) তাঁর বোন একই হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাগরিকা সরকার (৩০), করুণা রানী সরকার (৫৫), বাবা সুনীতি রঞ্জন সরকার (৬০) এবং সহযোগী মো. মাসুমের (৫০) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। গত ২০ এপ্রিল আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নাটোরের পুলিশ সুপার বরাবর পাঠানো হয়। কিন্তু সদর থানা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
বুধবার মামলাটির শুনানির তারিখ ছিল। আদালতে মামলাটি উঠলে বাদীর আইনজীবী আদালতকে জানান, আসামি সুমনা সরকার ও সাগরিকা সরকার সরকারি চিকিৎসক। তারা সদর থানা ভবনের অদূরেই হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই শহরেই তারা বিচরণ করেন। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। আদালতকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। আদালত শুনানি শেষে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করার আদেশ দেন। এসময় বিচারক গোলজার হোসেন বলেন, অন্যথায় এ ব্যাপারে আদেশের অনুলিপি ডিআইজি ও আইজিপি বরাবর পাঠানো হবে বলেও হুঁশিয়ার করে দেন।
বাদীর আইনজীবী আলী আজগর বলেন, ‘আসামিরা সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় হয়তো পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলে বিলম্ব করছে। আমরা বিষয়টি আদালতের নজরে এনেছি। আদালত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমরা সন্তুষ্ট। ’
এ বিষয়ে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ আদালতের আদেশ কার্যকর করা হবে বলে জানান।
নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক পরিতোষ চন্দ্র রায় জানান, তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সম্পর্কে কিছু জানেন না। সুমনা সরকার সদর হাসপাতালে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তাঁর বোন সাগরিকা সরকার সম্প্রতি অন্যত্র বদলি হয়েছেন।