নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে গত বৃহস্পতিবার হানা দেয় কালবৈশাখী । এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৫০টি বসতঘর। যার মধ্যে ৭৮টি ঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। পাঁচ দিন ধরে ওই ৭৮ পরিবারের ঠাঁই খোলা আকাশের নিচে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে ঝড়ের চার দিন পর গতকাল সোমবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন। তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, স্থানীয় চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার কাজ শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পারইল ইউনিয়নের কামতা, হারইল হিন্দুপাড়া ও বিশা গ্রামের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী বয়ে যায়। এতে ১৫০টি বসতঘরের ক্ষতি হলেও লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ৭৮টি ঘর। এ ছাড়া গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কালবৈশাখীর চার দিন পর বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত তিন গ্রামের মানুষ।
মঙ্গলবার দুপুরে হারইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কেউ বাঁশ কাটছে, কেউ ঘরের চালের ওপরে উঠে ছাউনি দেওয়ার চেষ্টা করছে। আবার অনেকেই অর্থাভাবে এখনো খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেছে। অনেকে খাদ্য সংকটেও পড়েছে।
উপজেলার হারইল গ্রামের ভারত চন্দ্রের স্ত্রী আতশি রানী বলেন, 'বৃহস্পতিবারের ঝড়ে আমাদের ঘর ভেঙে গেছে। অল্পের জন্য আমি আর আমার ছেলে প্রাণে রক্ষা পেয়েছি সেই রাতে। ভাঙা ঘর মেরামতের সামর্থ্য নেই। বাধ্য হয়ে দিনের বেলায় রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে খোলা জায়গায় থাকতে হচ্ছে। রাতে এক প্রতিবেশীর ঘরে ঘুমাচ্ছি। '
একই গ্রামের রাখাল চন্দ্রের ছেলে নিমাই চন্দ্র বলেন, 'আমরা খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। অর্থকষ্ট আমাদের পিছু ছাড়ে না। এর মধ্যে ঝড়ের কারণে বাড়ির চালা উড়ে গেছে। এখনো মেরামত করতে পারিনি। সরকারি সহযোগিতা পেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম। '
পারইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে প্রায় ১৫০টি পরিবার ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে কামতা, হারইল হিন্দুপাড়া গ্রামে প্রায় ৭৮টি ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। '
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, 'সোমবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো পরিদর্শন করেছি। পুরো তালিকা হাতে পাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহযোগিতার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। '