প্রতিবছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে কক্সবাজার সৈকতের ঝাউবীথির বালিয়াড়িতে রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ণিল বর্ষা উৎসব। সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে শুরু হওয়া এই উৎসব আগামী ২ মাস পর্যন্ত চলবে। প্রতি শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি রাখাইন তরুণ-তরুণী, আবাল বৃদ্ধাবণিতার মহামিলন মেলা বসবে এখানে।
উৎসব শুরুর প্রথম দিন শুক্রবার দুপুর থেকে সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে শহরের বিভিন্ন রাখাইন পল্লী থেকে তরুণ-তরুণীরা সৈকতে জড়ো হতে থাকেন।
বিজ্ঞাপন
রাখাইন নারী মা টিন টিনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ‘বর্ষা উৎসবে দুই মাসব্যাপী চলে অন্যরকম আনন্দ। এখানে আনন্দ, হাসি আর গানে মেতে ওঠে সবাই। উৎসবটা যেহেতু তারুণ্য নির্ভর, তাই উচ্ছ্বাসও চোখে পড়ে বেশি। দিন দিনই বাড়ছে এই উৎসবের জনপ্রিয়তা। ’
উৎসবে যোগ দেওয়া এক তরুণী বলেন, ‘এই উৎসব কেবল কক্সবাজার সৈকতেই হয়। সৈকতে সবাই মিলে নাচ-গানে মেতে উঠতে ভীষণ ভালো লাগে। তরুণদের কাছে এই দিনটির তাৎপর্যই আলাদা। অনেকে সারা বছর দিনটির জন্য অপেক্ষা করেন। ’
কক্সবাজার মডেল স্কুলের শিক্ষিকা মাউন টিন রাখাইন জানান, ‘প্রায় শতাব্দীকাল ধরে রাখাইন সম্প্রদায় এ উৎসব পালন করে আসছে। এক সময় হিমছড়ির অরণ্যে এ উৎসব উদযাপন করা হতো। সেখানে রাখাইন সমাজের পরিবার, বন্ধু মহল ও আত্মীয়-স্বজন গ্রুপভিত্তিক নানা রকমের খাবার নিয়ে চলে আসে এখানে। গত এক দশক থেকে সমুদ্র আর প্রকৃতিকে আরো নিবিড়ভাবে কাছে পেতে সৈকতের ঝাউবাগানে পালন করা হচ্ছে মন রাঙানো এই বর্ষা উৎসব। ’
প্রতিবছর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত সৈকতে এ উৎসব পালন করে থাকে রাখাইন সম্প্রদায়। এটি কোনো ধর্মীয় উৎসব নয়। শুধুমাত্র সামাজিকভাবে পরিবার পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব মিলেমিশে খানিক বর্ণিল সময় কাটানোর জন্য এই আয়োজন। সঙ্গে আহবান করা হয় বর্ষাকে।