বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় অনেক মৎস্য ঘেরের পাড়ে শোভা পাচ্ছে সরিষার ফুল। জলে মাছ, ডাঙায় হলুদের আভা। সেই সরিষায় মৌমাছির আনাগোনা। বিগত শতকের নব্বইয়ের দশকের আগে যখন মাছের ঘের ছিল না, তখন সমতল মাঠে শীতকালে শোভা পেতো হলুদ সরিষা ক্ষেত।
বিজ্ঞাপন
মৌমাছিরা এক ফুল হতে আরেক ফুলে বিচরণের কারণে নারী-পুরুষ ফুলের পরাগায়ন হয়। সরিষার পরাগায়ন থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছি। এতে একদিকে সরিষার ফলন ভালো হয়, অপরদিকে মূল্যবান মধু পাওয়া যায়। সরিষাক্ষেতের পাশে মৌমাছি চাষ হলে সরিষার ফলন ১০ ভাগ বেড়ে যায়। চিতলমারীতে চলতি বছর প্রায় ১৬৮ হেক্টর জায়গায় সরিষার আবাদ হয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ২০২ মেট্রিকটন সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। শীতকালে এই সরিষা চাষাবাদ আরো বৃদ্ধির পাশাপাশি মধু আহরণের উদ্যোগ নিলে কৃষি লাভের ক্ষেত্রে নবদিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। এ কথা জানালেন চিতলমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অসীম কুমার দাস।
২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে চিতলমারীর শ্যামপাড়া গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে মৌমাছিরা উড়ে উড়ে মধু আহরণ করছে। চিতলমারীর চরবানিয়ারী ইউনিয়নের শ্যামপাড়া গ্রামের চাষি বিভাষ মন্ডল বলেন, পর পর কয়েক বছর টমেটো চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে হতাশ হয়ে পড়ি। একপর্যায়ে তাদের ঘেরের পাড়ে সরিষার দানা ফেলেন। আগের সেই সমতল ভূমি না হলেও, প্রায় ২৫ বছর পর ঘেরের পাড়ে সরিষার ফুল দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। মৌমাছিরাও এসেছে।
অপরদিকে, তিনশ মৌচাকের বাক্স নিয়ে মধু সংগ্রহে চিতলমারী আসেন সুন্দরবনাঞ্চলের মো. আব্বাস আলী। সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জের রিয়াদ আলী গাজীর ছেলে তিনি। চিতলমারীর কাঠিপাড়া গ্রামে মধু সংগ্রহের বাক্স নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি জানান, তাদের এলাকায় সরিষার আবাদ কম। ফলে তার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় মধু সংগৃহীত হবে না। চিতলমারীতে আরো বেশি সরিষা, বরই আবাদ করলে তার ফলনও ভালো হবে, প্রচুর মধুও পাওয়া যাবে। তিনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করেন।