যশোরের মনিরামপুরের শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান ও সাবেক দুই চেয়ারম্যানের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার চিনাটোলা বাজারে ঘটনাটি ঘটে। এতে দু গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
দুই চেয়ারম্যান একে অপরকে মারপিট করেছেন বলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। ২০১৬ সালে তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন। আর আলমগীর হোসেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য। তিনি ২৮ নভেম্বরের নির্বাচনে নৌকা নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এদিকে দু চেয়ারম্যানের মারামারির ঘটনায় চিনাটোলা বাজারে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মারামারির ঘটনায় এক চেয়ারম্যান অপর চেয়ারম্যানকে দুষছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের দাবি, সাবেক চেয়ারম্যান মনির লোকজন চিনাটোলা বাজারের মাংস বিক্রেতা জাকিরের কাছ থেকে দীর্ঘদিন চাঁদা আদায় করে আসছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের বাধা দিতে গেলে সাবেক চেয়ারম্যান মনি ও তার লোকজন আলমগীর হোসেনের ওপর হামলা করেন।
অন্যদিকে, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির দাবি, তার এক চাচাকে চিনাটোলা বাজার থেকে উৎখাত করতে চেয়েছিল মাংস বিক্রেতা জাকির। প্রতিবাদ করলে বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর নিজে তাকে ও তার লোকজনকে মারপিট করেছেন।
মাংস বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, চার বছর ধরে সপ্তাহে ৫ দিন আমি চিনাটোলা বাজারে মাংস বিক্রি করি। মনি চেয়ারম্যানের চাচা আতিয়ার দিন ১০০ টাকা করে নিয়মিত আমার কাছ থেকে চাঁদা নিতেন। গত সোমবার টাকা না দেওয়ায় মঙ্গলবার বিকেলে আতিয়ার আমার কাছে সে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করার চেয়ারম্যান মনির উপস্থিতিতে তার চাচা ও ভাইরা আমাকে মারপিট করে। জাকির বলেন, এ সময় চেয়ারম্যান আলমগীর এগিয়ে আসলে সাবেক চেয়ারম্যান মনি তাকে (আলমগীর) লাথি মারেন।
শ্যামকুড় ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, জাকিরকে মারার ঘটনা শুনে আমি মেম্বরদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। আমি চাঁদাবাজি বন্ধের ঘোষণা দিলে সাবেক চেয়ারম্যান মনির ভাইরা আমার উপর হামলা করে। , মনি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তারা আমার গায়ে হাত তোলে। মনি নিজে আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন।
চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি নৌকা না পেয়ে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। একই সাথে স্বতন্ত্র আরো তিন প্রার্থী সরে দাঁড়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আলমগীর হোসেন। এরপর থেকে শ্যামকুড় ইউনিয়নে দু গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলেছে।