সরকারি কর্মসূচিতে জিংক সমৃদ্ধ বায়োফর্টিফাইউড ফসলের সম্ভাব্য অন্তর্ভুক্তিতে ব্লিংস প্রকল্প বিষয়ে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে বেসরকারি সংস্থা হার্ভেস্টপ্লাস বাংলাদেশ এ সভার আয়োজন করে। ইউরোপিয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশের পুষ্টি নিরাপত্তা ও শাসন ব্যবস্থা উন্নতকরণের উদ্যোগ (ব্লিংস) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় হার্ভেস্টপ্লাস বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ড ভিশন, আইডিএস ও উন্নয়ন সংঘ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে জামালপুর ও শেরপুর জেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন হার্ভেস্টপ্লাস বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ম্যানেজার ড. এম এ সালেক।
বিজ্ঞাপন
অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান। জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিতাই চন্দ্র বণিকের সভাপতিত্বে এ সভা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হার্ভেস্টপ্লাসের কান্ট্রি ম্যানেজার ড. মো. খাইরুল বাশার ও জামালপুরের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. হাবিবুর রহমান খান, সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস প্রমুখ। সভায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিমসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, প্রকল্পের উপকারভোগী কৃষক ও হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
সভায় জানানো হয়, ব্লিংস প্রকল্পের মাধ্যমে জামালপুর ও শেরপুর জেলার ছয়টি উপজেলায় এক লাখ ৫৩ হাজার ৮২৫টি দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবার নিয়ে প্রকল্পটি কাজ করছে। এর মধ্যে ৬১ হাজার ৫০০ জন ক্ষুদ্র কৃষক রয়েছেন। ইউরোপিয় ইউনিয়ন প্রায় ১০০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এই প্রকল্পে। ৫৪ মাসব্যাপী এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রকল্পভুক্ত এলাকায় পুষ্টিগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ শিশু ও মায়েদের পুষ্টিমান উন্নত করা। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে শতকরা ৫০ ভাগ মা ও শিশুদের শরীরে জিংকের ঘাটতি রয়েছে। তাই এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ বায়োফর্টিফাইড খাদ্য উদ্ভাবন যেমন জিংক ধান, গম এবং জিংক ও আয়রন মসুর ডালের চাষাবাদ সম্প্রসারণ, উপকারভোগীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সভায় আরো বলা হয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত জিংক সমৃদ্ধ জাতগুলোর মধ্যে আমন মৌসুমে বারি-৬২ ও বারি-৭২ এবং বুরো মওসুমে বারি-৬৪,৭৪, ৮৪, বঙ্গবন্ধু ১০০ ও ১০২ জাতের ধানের সরকারিভাবে ব্র্যান্ডিং করে কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক আকারে উৎপাদন, বীজ উৎপাদন ও বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে জিংকসমৃদ্ধ চালের ভাত থেকে মা ও শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষের শরীরের জিংকের চাহিদা পূরণের হার বাড়ানো সম্ভব হবে। সভায় সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচি বিশেষ করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে উপকারভোগী দরিদ্র ও হতদরিদ্রদের মাঝে জিংক সমৃদ্ধ চাল সরবরাহ করার পরামর্শ দেন আলোচকবৃন্দ।