<p>যশোরের চৌগাছায় পলিথিনের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সর্বত্রই ক্ষতিকর পলিথিন যেন জীবনযাপনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে, পলিথিন এখন কৃষিজমিতেও ব্যবহার হচ্ছে। ফলে চরম হুমকির মুখে পড়বে পরিবেশসহ মানুষের জীবন। সচেতন মহল পলিথিন ব্যবহার বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন।</p> <p>জানা গেছে, সহজলভ্য ও বহনেও সহজ হওয়ায় ছোট-বড় সবাই প্রয়োজনীয় কাজে পলিথিন ব্যবহার করেন। বাজার-সওদা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্য বহনের ক্ষেত্রে পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে। একসময় পলিথিনের শুধু ঠোঙা পাওয়া যেত, কিন্তু বর্তমান সময়ে শুধু ঠোঙা না, সব কিছুতেই জড়িয়ে আছে পলিথিন। কোনোক্রমেই পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। </p> <p>তবে ভয়াবহ খবরটি হচ্ছে, পলিথিন এখন কৃষিজমিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। সচেতনতার অভাবে কৃষকরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে পলিথিন ব্যবহার করছেন। দেখা গেছে, কয়েক বছর ধরে উপজেলায় ব্যাপক হারে বেড়েছে থাই পেয়ারার চাষ। প্রতিটি গাছে পেয়ারার গুটি হলেই পলিথিনের ব্যাগ দিয়ে মোড়া হচ্ছে। ওই পেয়ারা খাওয়ার উপযোগী হলে পলিব্যাগ ছিঁড়ে পেয়ারা বের করে তারপর বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে প্রত্যেক জমির আশপাশে হাজার হাজার পেয়ারা বাঁধা পলিথিন পড়ে থাকছে। এতে করে ফসলিজমি উর্বরতা হারাচ্ছে। কার্যত জমি ও পরিবেশের ক্ষতি তেমন লক্ষ করা না গেলেও এর ক্ষতিকর প্রভাব দ্রুতই লক্ষ করা যাবে।</p> <p>জগদীশপুর গ্রামের কৃষক রোকনুজ্জামান বাবু জানান, কৃষিকাজে ব্যবহৃত পলিথিন মাঠেই পুড়িয়ে ফেলা দরকার। তা না করলে ভবষ্যিতে ওই পিলিথিন জমির সঙ্গে মিশে খুব ক্ষতি করবে। চাষে বাধাগ্রস্ত করবে।  </p> <p>পেয়ারাচাষি রুবেল হোসেন বলেন, হাইব্রিড জাতের যে পেয়ারার চাষ হচ্ছে, তাতে পলিথিন না দিলে একটি পেয়ারাও খাওয়ার যোগ্য হবে না, ফলনও কম হবে। ফলে বিঘার পর বিঘা জমিতে ব্যবহার হচ্ছে ক্ষতিকর পলিথিন।</p> <p>পৌর বাজারের সবজি বিক্রেতা ডবলু বলেন, একসময় বাজারে কিছুদিনের জন্য পাটের ব্যাগ পাওয়া যেত। কিন্তু হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন আর পাটের ব্যাগ পাওয়া যায় না, কাপড়ের ব্যাগের দাম বেশি। পলিথিনের দাম কম, বহনে সহজ, তাই ব্যবহার বেশি। পলিথিনের ক্ষতির দিক সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।</p> <p>রবিউল ইসলাম নামে ওই বাজারের এক ক্রেতা বলেন, ব্যবহার সহজ দেখেই ব্যবহার করছি। ক্ষতির দিকটা ভাবি না। বাজার পলিথিনে সয়লাব। নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে এটা কমিয়ে আনা যেতে পারে।</p> <p>এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, পলিথিন কৃষিজমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পলিথিন ব্যবহার বন্ধে নির্দেশনা আছে। তিনি বলেন কৃষকদের সচেতন হতে হবে। </p>