<p>নাটোরের গুরুদাসপুরে বৃদ্ধ কৃষকের সাড়ে ৬২ শতাংশ লিচুর বাগান এক যুবলীগ নেতা ভয় দেখিয়ে পাঁচ বছর ধরে জবরদখল করে খাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষক আফতার খাঁ (৭২)। এলাকার অধিকাংশ লোক তাঁর পক্ষে থাকলেও ভয় ও ঝামেলা মনে করে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।</p> <p>জানা যায়, উপজেলার মশিন্দা চরপাড়া গ্রামের মৃত জহির খাঁর ছেলে আফতার খাঁ চাঁচকৈড় খলিফাপাড়া গ্রামের মৃত মানু প্রামাণিকের দুই ছেলে আবুল কাশেম ও লেক মামুদের কাছ থেকে ১৯৭২ সালে মশিন্দা মৌজায় ওই সাড়ে ৬২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সেই জমিতে আফতার খাঁ ৪২টি লিচুর গাছ লাগিয়ে ৪৯ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। পাঁচ বছর আগে একই গ্রামের মৃত লেক মামুদ ওরফে রেকাতের পুত্র মশিন্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দিন (৪০) লিচুর গাছসহ ওই জমিটি দখল করে নেন। শুধু ক্ষমতার দাপট ও গোষ্ঠীগত বল দেখিয়ে নিরীহ কৃষক আফতার খাঁর লিচু বাগান খাচ্ছেন তিনি।</p> <p>সরেজমিন গেলে এলাকার অধিকাংশ মানুষ জানায়, লিচু বাগানটির প্রকৃত মালিক আফতার খাঁ। শুধু তাই নয়, আরএস ৪১৬ খতিয়ানের ২৭১৬ ও ২৭১৭ দাগের সাড়ে ৬২ শতাংশ জমি দলিল ও দখলমুলে ভোগদখল করছেন তিনি। এমনকি হালনাগাদ খাজনা খারিজ সবই আছে আফতার খাঁর নামে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের নালিশি লিখিত রায়ও প্রমাণ করে ওই লিচু বাগানের মালিক আফতার খাঁ।</p> <p>জমির দলিল ও রেকর্ড সূত্রে জানা যায়, জমির মূল মালিক মৃত ঝুমুর প্রামাণিকের ছেলে মৃত আসান্দি প্রামাণিক। আসান্দির কাছ থেকে ০৭-০৩-১৯৬৩ সালে জমিটি ক্রয় করেন মৃত আজগর আলী। আজগর আলীর কাছ থেকে ১৪-১২-১৯৭০ সালে আবুল কাশেম ও লেক মামুদ জমিটি ক্রয় করেন এবং ০৪-০৩-১৯৭২ সালে তাদের কাছ থেকে ওই জমি ক্রয় করেন আফতার খাঁ।</p> <p>জামাল উদ্দিন এ ব্যাপারে উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তবে তার দাবি, জমিটি তার মা সুখজানের অংশ। সুখজান উমির কাজীর নামে রেকর্ড সূত্রে অংশীদার।</p> <p>কৃষক আফতার খাঁ অভিযোগ করে জানান, এলাকার কতিপয় লোকের প্রভাবে যুবলীগের তকমা গায়ে লাগিয়ে জামাল উদ্দিন জমিটি দখল করে আছেন। আর জমিটি ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছেন।</p> <p>গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এটা ভূমি অফিসের কাজ। তারপরও অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>