বন্দরের মদনপুরে আধিপত্য বিস্তার ও ড্রেজার ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে জুয়েল হোসেন (২৩) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ওই যুবকের হাত বিচ্ছিন্ন করা হয়। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে মদনপুর ইউনিয়নের আন্দিরপাড় এলাকার শাইরা গার্ডেন রিসোর্টের প্রবেশ পথের সড়কে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত জুয়েল বন্দরের আন্দিরপাড় গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বুধবার রাতে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও ড্রেজারের পাইপ লাইন স্থাপন নিয়ে মদনপুরের আন্দিরপাড় এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে আলীম বাহিনীর সঙ্গে একই এলাকার নিহত জুয়েলের বাবা আনোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল। বিরোধের জের ধরে আলীমকে কিছু দিন আগে নিহত জুয়েলের বড় ভাই সোহেল মারধর করে। পরে এ ঘটনাটি শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সামাজিকভাবে মীমাংসা হয়। বিরোধ নিষ্পত্তির পর বুধবার রাতে শাইরা গার্ডেনে জুয়েলকে ডিনার পার্টিতে আমন্ত্রণ জানায় আলীম। রাতে ডিনার পার্টিতে যাওয়ার সময় ছুরি, চাপাতি নিয়ে আলীম ও সেলিমসহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসী জুয়েলের উপর হামলা চালায়। এ সময় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দেহ থেকে একটি হাত বিচ্ছিন্ন করে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আলীম বাহিনী। এ ঘটনার পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি ব্যবহার করা হয় বলে এলাকাবাসী জানান। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেনসহ একদল পুলিশ। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় জুয়েল নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বন্দর থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় দুজন আটক আছে। আর সন্ধ্যায় নিহতের লাশ দাফনের পর স্বজনরা মামলা করবে।
মন্তব্য