সান্তাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় গরিব ও অসহায়দের ঘর দেওয়ার নামে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। হতদরিদ্র, গরিব ও অসহায়দের ঘর দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার তিন বছরেও ঘর পাননি তারা। তাই বাধ্য হয়েই ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরতের দাবিতে ইউপি কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তারা বলেন ঘর দিন না হলে টাকা ফেরত দিন।
তাদের অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু সরকারি বরাদ্দের ঘর দেওয়ার নামে ইউপি সদস্য, গ্রাম পুলিশ ও দলীয় কর্মীদের মাধ্যমে সান্দিড়া, দমদমা, ছাতনিসহ বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা ঘরের আশায় চেয়ারম্যানের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করলে তিনি কখনো ‘জমি আছে বাড়ি নাই প্রকল্প, আশ্রয়ন প্রকল্প, আবার কখনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রকল্পের ঘর’ দেয়ার আশ্বাস দেন। কিন্ত আজ পর্যন্ত তাদের কোনো ঘর বরাদ্দ দিতে পারেননি। চেয়ারম্যান সরকার দলীয় নেতা হওয়ায় গত তিন বছরেও প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে বা প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। হঠাৎ রবিবার সকালে ভুক্তভোগী সুমন হোসেন, মেহেরুন, হাসান, আব্দুর রাজ্জাক, মোসলেমা ও হোসেন আলীসহ বেশ কয়েকজন ইউপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, চেয়ারম্যান গত ৩ বছর আগে আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের ঘর দেওয়ার জন্য মহিলা মেম্বার সফুরা বেগমের মাধ্যমে প্রত্যকের কাছ থেকে ১৫-১৮ হাজার টাকা করে নেয়। এরপর সফুরা মারা গেলে তারা ঘর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। সমাধান চেয়ে চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি তাদের কিছু টাকা ফেরত দেন এবং পরবর্তীতে বাঁকি টাকা দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।
এ ছাড়া ওই ইউপির সান্দিড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের বাড়ি নির্মাণ শুরু হলে তিনি প্রতিবন্ধী মেয়ে রঞ্জনা আক্তারের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে মৌখিকভাবে একটি বাড়ির আবেদন করেন। কিন্তু চেয়ারম্যান নানা খরচের কথা বলে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এরপর এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে চেয়ারম্যানকে ৪৫ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু তিনি এখন আর বাড়ি বা টাকা কোনোটায় ফেরত দিচ্ছেন না।
সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বলেন, ঘর দেওয়ার নামে তিনি কারো কাছে থেকে অর্থ গ্রহণ করেননি। তবে সান্দিড়া গ্রামের মেম্বার কিছু টাকা নিয়েছিলেন, তিনি মারা যাওয়ার পর ভুক্তভোগীরা তার কাছে অভিযোগ করলে তিনি সাধ্য মতো কিছু টাকা দিয়েছিলেন।
তিনি আরো জানান, এখন আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যাতে আগামী নির্বাচনে আমার জনপ্রিয়তা নষ্ট হয়। তাছাড়া যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছে সেগুলো দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি।
মন্তব্য