চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের পূর্ব চাপাছড়ি গ্রামের উত্তর পাড়ায় আবুল বশর তালুকদার (৪৮) নামে এক বিএনপি নেতার দুই পা কেটে খুন করেছে সন্ত্রাসীরা। পৈশাচিক এ হত্যাকাণ্ডের পর সন্ত্রাসীরা উল্লাস করতে করতে কাটা পা নিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, উশৃঙ্খল যুবকদের মাদক ব্যবসায় বাধা দিতে গিয়ে গতকাল শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাতের জের হিসেবে পৈশাচিক এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। শুক্রবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রসিদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. মোজাঙ্গীর, মো. সাদু রশিদ, আব্দুল জব্বার নামের ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অপরদিকে আবুল বশরের খুনের ঘটনায় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী সকলের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার আবুল বশর তালুকদার ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। তিনি স্থানীয় আব্দুস সালাম তালুকদারের পুত্র।
সরেজমিন গেলে গ্যারেজের মালিক আব্দুল জব্বার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হবার আগে বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তার গ্যারেজে তাস খেলা খেলেন আবুল বশর তালুকদার, জমির, শাহজাহান ও রুবেল। ওই সময় বাইরে ওৎ পেতে বসে থাকা লাসু বার বার উকি দিচ্ছিল। তাস খেলা শেষে আবুল বশর বাড়ি যাবার সময় বাড়ির পাশে কবরস্থানে পৌঁছলে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা আবুল বশরের দুই পা কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এমনকি কাটা এক পা নিয়েও যায়। আবুল বশরের আহত অবস্থার গোঙানির খবর পেয়ে স্থানীয় আরেক ইউপি সদস্য করিম ও আবুল বশরের কন্যা শাবনাজ তাকে উদ্ধার করে। এর কিছুক্ষণ পর আবুল বশর প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে মারা যান।
আবুল বশরের স্ত্রী খালেদা বেগম ও মেয়ে শাবনাজের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক ব্যবসায় বাধা দিতে গিয়ে খুন হয়েছেন আবুল বশর তালুকদার। তিনি মারা যাবার আগে তার বড় কন্যা শাবনুরকে সব খুনিদের নাম বলে গেছেন। শাবনুর তার বাবার লাশ নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত কাজে পুলিশের সাথে গেছেন।
সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আবুল বশর কেন খুন হয়েছেন তা রহস্য বের করার তদন্ত চলছে। পুলিশ সার্বক্ষণিক মাঠে আছে। জুয়া খেলায় সম্পৃক্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেটে নেওয়া পা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। খুনিদের কেউ রেহায় পাবে না।
মন্তব্য