বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার আর মিয়ানমারে ব্যবসা ও বিনিয়োগ—পশ্চিমা দেশগুলোর এমন দ্বিমুখী নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। একই সঙ্গে তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুধু ‘লিপ সার্ভিস’ বা মুখে কথার ফুলঝুরি না ছড়িয়ে তাদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি সোমবার (৮ মার্চ) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) ‘কূটনীতিতে নারী : তারা কেমন করছে?’ শীর্ষক ওই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামিরসহ কূটনীতিক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্পৃক্ত সব ব্যক্তি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত বাংলাদেশকে ছবক দেওয়ার পরিবর্তে রাখাইন রাজ্যে যাওয়া এবং সেখানে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের দু-একজন জেনারেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ যথেষ্ট নয়। তারা তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। গত চার বছরে মিয়ানমারে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সাড়ে তিন গুণ থেকে ১৫ গুণ বেড়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘১৫ গুণ! আপনারা এটি বিশ্বাস করতে পারেন? একটি দেশ, যে মানবাধিবার লঙ্ঘন করে, জাতিগত নির্মূল চালিয়েছে আর আপনারা তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন! আপনারা আবার মানবাধিকারের কথা বলেন?’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে সংস্থা মানবতার জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছে তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। কারণ তারা এই লোকদের, দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের প্রত্যাবাসনের জন্য যথেষ্ট ভূমিকা রাখছেন না।
মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা কুতুপালংয়ে থাকল না ভাসানচরে থাকল এটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি অপ্রাসঙ্গিক। প্রাসঙ্গিক বিষয় হলো, তাদের অবশ্যই বসতভূমিতে ফিরে যেতে হবে ও সম্মানজনক ভবিষ্যৎ ও জীবন পেতে হবে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন। ডিকাব সদস্য ইশরাত জাহান উর্মি অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
মন্তব্য