প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, এখন গাছের পাতায় পাতায় আওয়ামী লীগ। এটা রাজনীতির জন্য খুবই বিপজ্জনক। এটা যদি রাজনীতিবিদদের হাতে থাকত তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু এটা যদি প্রফেশন হয়ে যায় তাহলে খুব মারাত্মক ব্যাপার। আমি মনে করি প্রফেশনাল হিসেবে যারা আছেন তাদের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে আপনার প্রফেশনে আপনি সাকসেসফুল কি-না সেটা লক্ষ রাখা। আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড কি সেটা দেখার দরকার নেই। শুধু একটা জিনিস দেখতে হবে যে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি কি-না।
আজ সোমবার (১ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনসে অনুষ্ঠিত পুলিশ মেমোরিয়াল ডে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ।
শামীম ওসমান আরো বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুই ধরনের মানুষ আছেন। এক ধরনের মানুষ আবেগ দিয়ে রাজনীতি করেন। আরেক ধরনের মানুষ তাদের মাথার বুদ্ধি দিয়ে। যারা আবেগ দিয়ে করেন তাদের জন্য রাজনীতিটা খুব কঠিন হয়ে যায়।
হাদিসের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আমি যদি অবৈধ কাজ করি আমার ছেলে মেয়েও হাশরের ময়দানে আমাকে চিনবে না। সুতরাং আমি এমপি, মন্ত্রী আমাদের এ সম্মান আল্লাহ দিয়েছেন। সব ধর্মই ভালো কথা বলে। কোনো ধর্ম খারাপ কথা শেখায় না। ভুল করার পরে যে নিজেকে সংশোধন করে নেন আল্লাহ তাকে বেশি পছন্দ করেন।
তিনি বলেন, আজকে দেশে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা আপনারা আমার চেয়ে কম জানেন না। এটা শুধু শেখ হাসিনার সরকারকে ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র না। এটা রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার। রাষ্ট্রের মূল কাঠামেগুলোকে দেশের বাইরে থেকে বসে প্রতিনিয়ত আঘাত করা হচ্ছে। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করা হচ্ছে এই রাষ্ট্রকে তালেবান রাষ্ট্র বানাতে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে কারণ আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই দেশে থাকবে। আপনারা ভালো কাজ করবেন, আপনাদের প্রশংসা করব, খারাপ কাজ করবেন আপনাদের বিরুদ্ধে কথা বলব। এখানে কোনো ছাড় হবে না। কারণ আল্লাহর কাছে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে।
প্রভাবশালী এই এমপি বলেন, আমি এই কথাগুলো বললাম কারণ আমার চলে যাওয়ার সময় এসেছে। আমি প্রতিদিন মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকি। যদিও আমার মৃত্যু আজ থেকে ২০ বছর আগে ১৬ জুন হয়ে গেছে। আমার ডানে-বাঁয়ে যারা ছিলেন সবাই মারা গেছেন। আমি যে সাক্ষী দিয়েছি সে সাক্ষীও বদলে দেওয়া হয়েছে এবং সেটা আমার সরকারের আমলেই। আমি কোর্টে তা ডিনাই করে এসেছি।
পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের কাছে মানুষ অনেক কিছু আশা করেন। তা পূরণ করবেন কী করবেন না আপনাদের ইচ্ছা।
অনুষ্ঠানে দায়িত্বপালনরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী চার পুলিশ সদস্যের পরিবারকে সম্মাননা ও আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। তারা হলেন প্রয়াত কনস্টেবল ইসমাইল হোসেন, মো. জাকির হোসেন, মো. আবু হোসেন ও মো. রনি আহমেদ।
মন্তব্য