সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত।
বুধবার রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ দিনে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির বিকালে আসামিদের পূর্বের জামিন বাতিল করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ মামলার রায় প্রদানের দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি।
জামিন বাতিল হওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কলারোয়ার দুইবারের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, তিনজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন, রকিবুল ইসলাম ও রবিউল ইসলামসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সমূহের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। এ মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জন আসামির একজন টাইগার খোকন অন্য মামলায় জেলহাজতে আটক রয়েছে। পলাতক রয়েছে সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ১৫ জন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা, সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ, সিনিয়র আ্যাডভোকেট হায়দার আলী, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, অ্যাডভোকেট, নিজামউদ্দিন প্রমুখ।
আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন বাংলাদেশ হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ(২), অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তোজাম্মেল হোসেন তোজাম, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাডভোকেট অসীম কুমার মন্ডল, আ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষের এস এম মুনীর আদালতে ২০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি তুলে ধরে বলেন, সাক্ষীদের বক্তব্যে সকল আসামি দোষী প্রমাণিত হয়েছে। ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন। অপরদিকে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল ও অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বলেন, মামলার এজাহার, পুলিশের অভিযোগপত্র এবং সাক্ষীদের জবানবন্দির মধ্যে তথ্যগত ব্যাপক গরমিল ও অসংলগ্নতা রয়েছে। সাক্ষীরা কোনোভাবেই আসামিদের দোষী প্রমাণ করতে পারেননি।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে হাসপাতালে দেখে মাগুরা ফিরে যাবার পথে কলারোয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। এতে শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও তার সফরসঙ্গী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, শহিদুল হক জীবন, আবদুল মতিনসহ অনেকেই আহত হন। এ সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও হামলার শিকার হন।
এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো, মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশি আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।
মন্তব্য