ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়াস্থ পাবনা সুগার মিলস লি.সহ (পাসুমি) দেশের ৬টি চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পাবনা-দাশুড়িয়া মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ। অবশেষে মিলগেটে বিক্ষুব্ধ শ্রমিক কর্মচারীরা বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের (বিএসএফআইসি) চেয়ারম্যান সনদ কুমার সাহার কুশপুত্তলি দাহ করেছে।
আজ সোমবার সকালে পাবনা সুগার মিলস লিমিটেডের শ্রমিক কর্মচারী ও আখচাষীরা এসব কর্মসূচি পালন করেছে।
রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করায় পাবনা-দাশুড়িয়া মহাসড়কে চলাচল করা পাবনা-নাটোর-রাজশাহী-কুষ্টিয়া-যশোর-ঈশ্বরদীগামী দূরপাল্লাসহ স্থানীয় বিভিন্ন ধরণের যাত্রীবাহী ও মালামালবাহী পরিবহন রাস্তার দুই পাশে আটকে পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক কর্মচারী ও মিলস প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পাবনা চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল, শ্রমিক কর্মচারীদের ৬ মাসের বকেয়া বেতন, আখচাষিদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ ও পাসুমিসহ বন্ধ সকল চিনিকলগুলোতে মাড়াই মৌসুম চালু করা এবং বিএসএফআইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে মিলের শ্রমিক কর্মচারীরা মিলের সামনে পাবনা-দাশুড়িয়া মহাসড়কে অবস্থান নেয়। বিক্ষুব্ধরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। পরে তারা মিলগেটে গিয়ে কর্মসূচি পালন করে ও চেয়ারম্যানের কুশপুত্তলি দাহ করে বিক্ষোভ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে মিল চালু, বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ বিএসএফআইসি চেয়ারম্যান সনদ কুমার সাহার পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে বক্তব্য রাখেন পাবনা চিনিকল ওয়াকার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল, সাবেক সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন, শ্রমিকনেতা জাহিদুর রহমান জাহিদ, মিলের কর্মচারী আব্দুস সালাম সরকার, আখচাষি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী ডিলু প্রমুখ।
থানা ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, রাস্তায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক কর্মচারীরা টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করে। রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন ধরণের পরিবহন আটকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জানমালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে বিক্ষুব্ধদের রাস্তা থেকে সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
পাবনা চিনিকল ওয়াকার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন জানান, দেশের প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠানেই কিছু না কিছু লোকসান রয়েছে। অথচ লোকসানের মিথ্যা অজুহাতে পাবনা সুগার মিলসসহ দেশের ৬টি সুগার মিলস বন্ধ ঘোষণা করা হলো। এই মিলের শ্রমিক কর্মচারীদের বিগত ছয় মাসের বকেয়া বেতন পাওনা রয়েছে। আখচাষিদের পাওনা পরিশোধ করা হয়নি। মিলগুলো বন্ধ করায় হাজার শ্রমিক কর্মচারী ও আখচাষিরা বেকার হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বেকার হয়ে পথে বসতে হবে।
তিনি আরো জানান, বর্তমান কৃষকবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে হস্তক্ষেপ করে পাসুমিসহ বন্ধ ঘোষিত দেশের ৬টি সুগার মিলস দ্রুত পুনরায় চালু করবেন। একই সঙ্গে যতদিন পাসুমি চালু না হয় ততদিন পর্যন্ত আন্দোলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রাখা হবে বলেও জানান এই শ্রমিক নেতা।
মন্তব্য