মুক্তার বিয়ের কার্ড
ঢাক-ঢোল পিটিয়ে গানবাজনার আয়োজনে প্রায় ৫ শ অতিথি দাওয়াত দিয়ে আজ শুক্রবার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে ষষ্ঠ শ্রেণিপড়ুয়া মুক্তা আক্তারের (১৩)। এলাকা থেকে প্রশাসনের বিভিন্নজনের কাছে খবর পাঠিয়ে ওই বাল্য বিয়েটি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এ ধরনের বিয়ে হচ্ছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের হালিউড়া গ্রামে।
বিয়ের কার্ড দেখে ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই কিশোরী নান্দাইল উপজেলার হালিউড়া গ্রামের মো. মোশারফ হোসেনের মেয়ে মুক্তা আক্তার। স্থানীয় আব্দুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ট শ্রেণিতে পড়ে সে। জানা গেছে, পাশের শেরপুর ইউনিয়নের পূর্ব রাজাবাড়িয়া গ্রামের মো. মজিত মিয়ার ছেলে রাজীব মিয়ার সাথে বিয়ে দিন তারিখ ধার্য হয়। আজ শুক্রবার বিয়ের দিন। এ উপলক্ষে বিশাল সামিয়ানা টানিয়ে গরু জবাই করে অর্ধ সহস্রাধিক অতিথিদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার গায়ে হলুদের দিনে গানবাজনার আয়োজন করা হয়। এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করে স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন মাধ্যমে বাল্যবিয়ে ঠেকাতে অনুরোধ করেও ব্যর্থ হয়। পরে এ প্রতিনিধিকে জানালে তিনি বিষয়টি মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাসহ অনেকের মোবাইল নম্বরে ফোন করলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত মিন্টু বলেন, ওই বিয়ে সর্ম্পকে তিনি জানলেও বিয়েটি ভাঙতে পারবেন না। এ বিষয়ে তিনি আগামি নির্বাচনকে সামনে আনেন।
মেয়েটির বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মো. এনায়েত হোসেন বলেন, এখন তো বিদ্যালয় বন্ধ। তাছাড়া বিয়ে কেউ দিয়ে দিলে আমার কী করণীয় আছে। তারপরও খোঁজ নিচ্ছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুছ ছাত্তার বলেন, আমি ওই মেয়েকে কোনো জন্মনিবন্ধন দেইনি। আমাকেও ওই বিয়েতে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। তবে বাল্যবিয়ে হওয়ায় দাওয়াতে যাবো না। বিয়েটি বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করলে তিনি বলেন, সামনে তো নির্বাচন। কী করে আমি দোষী হই!
মেয়ের চাচা মো. শফিকুল ইসলাম ভাতিজির বাল্য বিয়ে হচ্ছে এটা স্বীকার করে বলেন, ভাই কিছু করার নেই । আগেই কোর্ট ম্যারেজ হয়েছে। সেখানে বয়স দেয়া হয়েছে ১৯। এখন শুধু আনুষ্টানিকতা।
মন্তব্য