<p>কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর বাজারে আগুন লেগে ২৫টি দোকান পুড়ে গেছে। এতে অন্তত কয়েক কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। </p> <p>আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বাজারের কাপড়পট্টির একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।</p> <p>খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ সদর ও তাড়াইল উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দুঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বাজারের কাপড় ও গেঞ্জি পট্টির প্রায় সবগুলো দোকানেই পুড়ে গেছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও অন্তত সাতটি দোকান।</p> <p>ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানায়, করোনা দুর্যোগের কারণে দোকানপাট বন্ধ ছিল। বাজারে পাহারাদার ছাড়া ব্যবসায়ীদের তেমন উপস্থিতি ছিল না। সকালে তারা আগুনের খবর পেয়ে বাজারে ছুটে যায়। ততক্ষণে কাপড় ও গেঞ্জিপট্টির বেশিরভাগ দোকান পুড়ে গেছে।</p> <p>মুড়িকান্দি গ্রামের নূরুল ইসলামের একটি বড় কাপড়ের দোকান ছিল। দোকানে অন্তত ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মালামাল ছিল। কিন্তু আগুনে সব শেষ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, তিনি বহু বছর কষ্ট করে এ ব্যবসাটি গড়ে তুলেছেন। এ ব্যবসার ওপরই নির্ভর করতেন। এক আগুনে তার পথে নামার উপক্রম হয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল, শফিকুল ইসলাম, বলরাম, এনামুল ও মাসুদ জানান, তাদের আয়-রোজগারের একমাত্র অবলম্বন ছিল এই ব্যবসা। কিন্তু বাড়ি থেকে বাজারে গিয়ে দেখেন তাদের আর কিছু নেই। আগুন সব কেড়ে নিয়েছে। এখন সরকার সহযোগিতা না দিলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না।</p> <p>এদিকে আগুন নেভানোর সময় বাজারে লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে বলে কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন। কাপড় ব্যবসায়ী মো. লিটন জানান, তার দোকানে আগুন লাগেনি। কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখেন দোকানের তালা ভাঙা। কোনো মালামাল নেই। কাপড় ব্যবসায়ী আতাব মিয়া বলেন, খবর পেয়ে বাজারে গিয়ে দেখেন দোকানে কোনো মালামাল নেই। প্রায় চার লাখ টাকার কাপড় ছিল। এগুলো কে নিল কিছুই জানেন না তিনি। </p> <p>বন্ধন পালের অভিযোগ, তার দোকান আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে মালামাল খুঁজে পাচ্ছেন না। অভিযোগ উঠেছে, একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে আগুন নেভানোর নামে বাজারে লুটতরাজ চালিয়েছে।</p> <p>কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মোবারক আলী জানিয়েছেন, আগুনে তাদের হিসেবে ২৩টি দোকান পুড়ে গেছে। আংশিকভাবেও কিছু দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্তের পর সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে।</p> <p>আগুনের খবর পেয়ে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা নূর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি সেখানে বাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সান্ত্বনা দেন। তিনি এ সময় বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা করা হয়েছে। তাঁদের কিভাবে সহায়তা দেওয়া যায়, তা নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের সব ধরণের সহযোগিতা দেওয়া হবে।</p> <p>তবে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মমিনুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের মালামাল লুট হওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান।</p>