<p>'মা-বাবা আমি তোমাদের সবাইকে ছেড়ে আমি চলে যাচ্ছি। কারণ তোমরা মরে গেলে আমি কিভাবে থাকব। আবদারটা রেখ আমার হাত থেকে দুই বার কোরআন শরিফ পড়ে গেছিল তাই কোনো গরিব ভিক্ষুককে ৫০ টাকা করে ১০০ টাকা দিও। হনুফা আপু, রাবেয়া আপু, রোকেয়া আপু তোরা মাকে দেখিস। তোরা মা-বাবার কাছে থাকিস। তোদেরকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি কষ্ট নিস না'। </p> <p>পরিবারের কাছে এমন চিঠি লিখে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় নাজিম হাওলাদার (১৩) নামে ষষ্ঠ শ্রেণিপড়য়া এক স্কুলছাত্র আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার রাতে বসতঘরের পেছনে একটি জাম্বুরা গাছে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে।</p> <p>আত্মহত্যার পূর্বে সে পরিবারের কাছে একটি চিঠি লিখে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থল হতে নিহত ওই স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরিবারের অভাব-অনটনে মনোকষ্টে সে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। নিহত নাজিম হাওলাদার উপজেলার পূর্ব ভাণ্ডারিয়া গ্রামের দিনমজুর এস্কান্দার হাওলাদারের ছেলে। সে উপজেলার পূর্ব ধাওয়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে লেখাপড়া করছিল। </p> <p>থানা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, নাজিমের দিনমজুর পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে অভাব-অনটন চলছিল। এমন অবস্থায় তার মা দুরারোগ্য ব্যাধিতে শয্যাশায়ী। দিনমজুর পিতার পক্ষে পরিবারের ভরণপোষণে কষ্ট হচ্ছিল। তিন বোন আর অসুস্থ মায়ের দুরাবস্থার মাঝে নাজিমের লেখাপড়া নিয়ে চরম হতাশায় সে আত্মহত্য করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যার আগে সে তার বাবার সাথে আসরের নামাজ আদায় করে। পরে পরিবারের কাছে চিঠি লিখে সে সকলের অগোচরে বসতঘরের পেছনে একটি জাম্বুরা গাছে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরিবারের লোকজন গাছে নাজিমের লাশ ঝুলতে দেখে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করে।</p> <p>ভাণ্ডারিয়া থানার ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান বলেন, ওই স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদনের প্রেক্ষিতে তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।</p>