<p>ব্যক্তিগত বাহন থাকা এখন আর বিলাসিতা নয়, বরঞ্চ অনেকক্ষেত্রেই এটি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে। যাতায়াত ব্যবস্থাকে দ্রুত, সহজ ও নিরাপদ করার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যে ও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ির দিকে ঝুঁকছেন। এক্ষেত্রে, নানা রকম সুবিধার জন্য বর্তমানে এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকলস) ও ক্রসওভার গাড়ির জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। </p> <p>বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের তথ্য থেকে দেখা যায়, ২০২২ সালে ১০ হাজারেরও বেশি এসইউভি গাড়ি বিক্রি হয়েছে। ২০১৩ সালে যেখানে মোট গাড়ি বিক্রির মাত্র ১১.১ শতাংশ ছিল এসইউভি ও ক্রসওভার, যা ২০২২-এ এসে দাঁড়িয়েছে ৩৮ শতাংশে।</p> <p>সাধারণত, এসইউভি গাড়ির প্রবেশমূল্য সেডানের প্রবেশমূল্যের চেয়ে বেশি হলেও, সঞ্চয় ও সুবিধার কথা বিবেচনা করলে দীর্ঘমেয়াদে এটি অনেক বেশি সাশ্রয়ী। এর মধ্যে এখন বাজারে বিওয়াইডি’র মতো অনেক বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের ই-এসইউভি পাওয়া যাচ্ছে যা সাধ্যের মধ্যে প্রিমিয়াম ফ্যাসিলিটিজ দিচ্ছে। ফলে, এসইউভি গাড়ির সুবিধার সাথে আরও যুক্ত হচ্ছে ইভির জ্বালানি-সাশ্রয় ও পরিবেশ সংরক্ষণের মতো সুবিধা। দেখে নেয়া যাক, ই-এসইউভি ও ই-ক্রসওভার গাড়ি আমাদের আর কী সুবিধা দিচ্ছে। </p> <p>ই-এসইউভি গাড়ির ভেতরে সেডান গাড়ির তুলনায় অনেক বেশি জায়গা থাকে। ফলে ৪-৫ জন সদস্যের একটি পরিবার এবং কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের প্রয়োজনীয় মালপত্র খুব সহজেই এর ভেতর এটে যায়। বিশেষ করে, বিওয়াইডি’র ই-এসইউভিগুলো এই সেগমেন্টের সকল গাড়ির মধ্যে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল, যার কারন তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। তবে, শুধু ভেতরে জায়গা হলেই হবে না, সাথে আরাম, স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা চাই। তাই, ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে এসব গাড়িতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে, অনেক পরিবারের কাছেই ই-এসইউভির জনপ্রিয়তা বাড়ছে।</p> <p>ই-এসইউভি গাড়ি সাধারণ আইসিই (ইন্টারনাল কম্বাশন ইঞ্জিন) গাড়ির তুলনায় দ্রুত গতি তুলতে সক্ষম। এই গতিময়তার সাথে যুক্ত হয় গাড়ির ভেতরের শান্ত পরিবেশ। বাইরের অপ্রয়োজনীয় শব্দ গাড়ির ভেতরে খুব বেশি ঢুকতে না পারায় গান বা পডকাস্ট শোনা আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক হবে। পাশাপাশি, হর্ন বা বৃষ্টির শব্দের মতো অপ্রয়োজনীয় আওয়াজ কম পাওয়ায় দীর্ঘ ড্রাইভিংয়ের পরও খুব বেশি ক্লান্তিবোধ হবে না।</p> <p>সাধারণ গাড়ির তুলনায় ই-এসইউভি গাড়িতে জ্বালানি-সাশ্রয় হবে, রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমবে। গাড়িতে তেল-গ্যাসের মতো অনাবয়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করা হলে, এতে গাড়ির খরচ বেড়ে যায়; একইসাথে, রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বাড়ে। ফলে কমদামে গাড়ি কিনছি মনে হলেও, আসলে সবমিলিয়ে গাড়ির পেছনের খরচ অনেক বেড়ে যায়। আবার ই-এসইউভি গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় পরিবেশ সংরক্ষণে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। একদিকে যাতায়াত ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন করতে যানবাহন ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নেই; অন্যদিকে, জলবায়ু বিপর্যয়ের মতো বিষয়ের ওপরেও সমানভাবে গুরুত্বারোপ করতে হবে।</p> <p>পাশাপাশি, ই-এসইউভি গাড়ি খুব দ্রুত সচল হওয়া এবং স্টার্ট দেয়ার আগেই প্রয়োজনীয় হিট উৎপাদনে সক্ষম। তাই, সারাবিশ্বেই বিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানি নির্ভর যানবাহনের ওপর মানুষের আস্থা বাড়ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে ইভি-ই হয়ে উঠেছে নির্ভরযোগ্য যানবাহন। এসইউভি গাড়ির সকল সুবিধার সাথে জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত হওয়ায় ই-এসইউভি ও ই-ক্রসওভার গাড়ি বৈশ্বিক ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।</p>