<p style="text-align:justify">রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক নবীন শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে র‌্যাগিং ও আবরার ফাহাদের মতো পিটিয়ে মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। </p> <p style="text-align:justify">ভুক্তভোগী মোহাম্মদ রকি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর বিশ্বাস এবং একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান নাভিল। তারা প্রত্যেকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বিনোদপুরের লেবুবাগান এলাকার ‘বিশ্বাস ম্যানসন’ ছাত্রাবাসে থাকতেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শেখ হাসিনাকে আমরা কখনোই প্রধানমন্ত্রী বলতাম না : চরমোনাই পীর" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/24/1727155672-d910c0bfa749cd12cea822ced3c1f8b7.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শেখ হাসিনাকে আমরা কখনোই প্রধানমন্ত্রী বলতাম না : চরমোনাই পীর</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2024/09/24/1428409" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">অভিযোগপত্রে মোহাম্মদ রকি উল্লেখ করেছেন, “আমি মোহাম্মদ রকি গতকাল রোববার রাত পৌনে ১২টা থেকে প্রায় দেড়টা পর্যন্ত মানসিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছি। ‘বিশ্বাস ম্যানসন’ ছাত্রাবাসের ২০১ ও ২০৫ নম্বর রুমের দুইজন শিক্ষার্থী গতকাল রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে আমার কক্ষে আসেন। শুরুতেই তারা আমাকে নানা রকম বিব্রতকর প্রশ্ন করেন। ফলে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হই। কথাবার্তার একপর্যায়ে তারা আমাকে বলেন, ‘তোকে হলের গেস্টরুমে নিয়ে যাব, গেস্টরুমে নিয়ে গিয়ে তোকে আদর আপ্যায়ন করব’।’’</p> <p style="text-align:justify">এরপর তারা বলেন, ‘শেষবারের মতো তোর মাকে কল দে, কল দিয়ে বলবি আর কোনো দিন দেখা না-ও হতে পারে, আমি কোনো ভুল করলে আমাকে মাফ করে দিয়ো।’ একপর্যায়ে তারা বলেন, ‘আবরার ফাহাদকে কিভাবে মারা হয়েছিল জানিস?’ আমি বলি, ‘জি ভাই, পিটায়ে মারা হয়েছিল।’ তারপর তারা বলেন, ‘তোকে এভাবে মারলে তখন কী করবি?’ তারপর আমি চুপ থাকি।</p> <p style="text-align:justify">অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘তারা হুমকি দিয়ে বারবার আমাকে হলের গেস্টরুমে যেতে বলেন। আমি যেতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে বলেন, ‘তুই যদি হলের গেস্টরুমে যেতে না চাস, তাহলে মেসে শিবির ডেকে নিয়ে এসে তোকে মারব।’ এরপর তারা আমাকে বলেন, ‘তোর রুমমেটদের সেমিস্টার ফাইনাল ৭ তারিখে শেষ হবে। ৮ তারিখ রাতে তোর সঙ্গে আমরা পার্টি দিব।’ এরপর তারা আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে রুম থেকে বের হয়ে যায়। এমতাবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জাপানে ভূমিকম্পের পর সুনামির সতর্কতা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/24/1727155371-54ae7c068c0d8c99aab598cf06ab5bfc.gif" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জাপানে ভূমিকম্পের পর সুনামির সতর্কতা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/09/24/1428408" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহাম্মদ রকি বলেন, গত শুক্রবার মেসে উঠেছি। এর মধ্যে একবার মেসে অবস্থানরত সবার কক্ষে গিয়ে পরিচিত হয়ে আসি। এরপর গত রবিবার রাতে ওই দুজন আমার কক্ষে এসে নানাভাবে হুমকি ও হয়রানি করেন। আমার বিশ্ববিদ্যালয়জীবন কেবল শুরু, এ ঘটনা ভুলতে পারছি না। ওই দিন রাতেও ঘুমাতে পারিনি। এ ঘটনা যেন আর কারো সঙ্গে না ঘটে, আমি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করছি।  </p> <p style="text-align:justify">বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দপ্তরে অভিযোগপত্র দেওয়ার সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের দেখা হয়। এ সময় ক্যাম্পাসে কর্মরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা শুনে তিনি ওই শিক্ষার্থীকে বলেন, ‘ঘাবড়ানোর কিছু নেই। আমরা আছি। এগুলো আমরা বরদাস্ত করব না।’</p> <p style="text-align:justify">পরে অভিযুক্ত দুজন শিক্ষার্থী ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মশিহুর রহমানকে প্রক্টর দপ্তরে ডেকে আনা হয়। এরপর অভিযুক্ত দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। উপস্থিত বিভাগের শিক্ষককে এ ব্যাপারে তাদের একাডেমিক কমিটির সুপারিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাতে বলা হয় এবং অভিযুক্ত দুজনকে তার হেফাজতে ছেড়ে দেওয়া হয়। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে সরকারকে সহায়তা করব" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/24/1727154673-949badd3dad97d739d3ce3d200406f70.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে সরকারকে সহায়তা করব</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/09/24/1428406" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন নাবিল বলেন, ‘আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভাগের বড় ভাই ওই ছেলের কক্ষে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে বড় ভাই রকির সঙ্গে মজা করেন। কিন্তু আমি সে রকম ইনফ্লুয়েন্স করি নাই। কোনো রকম শিবির কথাবার্তা, মারা বা অত্যাচার করা হয়নি। তবে আবরার ফাহাদের বিষয়টি উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং, মারামারি এসব চলে না। এ ধরনের কোনো পরিস্থিতিতে পড়লে আমাদের জানাবি। এরপর আমরা কক্ষ থেকে বের হয়ে যাই। কিন্তু সে বিষয়টা অন্যভাবে নিয়েছে।’</p> <p style="text-align:justify">অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী অন্তর বিশ্বাস বলেন, ‘তার সঙ্গে খুবই সাধারণভাবে কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টা সে যেভাবে উপস্থাপন করেছে, সেভাবে হয়নি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল তার সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি করা। কিন্তু ব্যাপারটা এতদূরে চলে যাবে বুঝতে পারিনি। শিবিরের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আবরার ফাহাদের বিষয়টি উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে বলেছি, তার সঙ্গে যেটা ঘটেছে, ওটা র‌্যাগিং কিন্তু তোমার সঙ্গে যা হচ্ছে এটাকে তুমি র‌্যাগিং হিসেবে নিয়ো না। তবে মাকে ফোন দেওয়ার বিষয়টা তাকে বলা হয়েছে। একটা ফরমাল সম্পর্ক করার জন্য বলেছিলাম।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কতটুকু হবে, প্রশ্ন নাহিদের" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/24/1727154621-6fd33470dea458ab90e18c964caa6eb9.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কতটুকু হবে, প্রশ্ন নাহিদের</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/09/24/1428405" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। একজন নতুন শিক্ষার্থীকে যেভাবে র‌্যাগিং দেওয়া হয়েছে, সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ শাস্তি যেভাবে নিশ্চিত করা যায়, আমরা সে চেষ্টাই করব। ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তির তথ্যগুলো আমরা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিভাগে পাঠাব। বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি একটা সুপারিশমালা তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিকে পেশ করবে। সেই অনুযায়ী শৃঙ্খলা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।’</p>