<p>রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের নম্বরপত্র (মার্কশিট) পোকায় খেয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে তা নিয়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।</p> <p>গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী তার মার্কশিট তুলতে গেলে বিষয়টি জানতে পারেন। </p> <p>শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের কাগজপত্রগুলো বিভাগের অফিসের ফ্লোরে পরে ছিল। এজন্য সহজেই পোকা কেটে নিছে। ডিপার্টমেন্ট আমাদের লাইফের এত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি। এর দায়ভার বিভাগকেই নিতে হবে বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। </p> <p>বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতকে ভর্তির সময় অনুষদ অফিসে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার আসল নম্বরপত্র (মার্কশিট) জমা দিতে হয়। পরে সেখান থেকে নিজ নিজ বিভাগকে নম্বরপত্র সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অফিস কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থীর মার্কশিট পোকায় খেয়ে ফেলে। গতকাল এক শিক্ষার্থী তার নিজের নম্বরপত্র তুলতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়।</p> <p>এ বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ইত্তেহাদুল ইসলাম প্রণুত বলেন, ডকুমেন্টসগুলা পোকায় কেটেছে। এতে অফিস স্টাফদেরই গাফিলতি ছিল। তারা অজুহাত দিচ্ছে, তিন মাস ডিপার্টমেন্ট বন্ধ ছিল। তাই এমন অবস্থা হয়েছে। কিন্তু আমাদের কাগজপত্রগুলা বিভাগের অফিসের ফ্লোরে পরে ছিল। এজন্য সহজেই পোকা কেটে নিছে। তারা এটা উঠিয়ে নিতে বলেছিল, আমাদের ৩-৪ মাস আগে। এখন তারা এটা বলারও চেষ্টা করতেছে যে, আমরা ডকুমেন্টস ফেরত নিতে বলেছি। আপনারা নেন নাই, এক্ষেত্রে আপনাদের দোষ। সোজা বাংলায় ভিক্টিম ব্লেইমিং করার ট্রাই করতেছে আমাদের।</p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কোনো জবাবদিহিতা নাই। একের পর এক ঘটনা ঘটে গেছে। আওয়ামীপন্থী শিক্ষক লিটন হোসেন সরাসরি শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষমতা চর্চা করতেন। হুমকি-ধামকি দিতেন। জবি উপাচার্য সাদেকা হালিমের ক্ষমতা দেখাতেন সবক্ষেত্রে। এমনকি আন্দোলনের সময় তিনি সরাসরি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। কিন্তু ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান কাজী রবিউল আলম শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আটকিয়ে ওনাকে বাঁচিয়ে দেন। কিন্তু ওই সময় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক রেজাল্ট খারাপ করিয়ে দেওয়া, হুমকি দেওয়া থেকে শুরু করে সব করেছেন। কিন্তু শেষমেষ ডিপার্টমেন্ট প্রায় ২০-৩০ জন শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ধ্বংস করে ফেলল। এজন্যই কি আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম?</p> <p>এবিষয়ে জানতে চাইলে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক কাজী রবিউল আলম বলেন, এ বিষয়ে জানার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যাদের মার্কশিটের ফটোকপি নাই তাদের বিভাগ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছি। আর বিস্তারিত সিদ্ধান্তের জন্য কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে। কারণ একাডেমিক কমিটির মিটিং এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।</p> <p>তিনি আরো বলেন, ভর্তির কিছুদিন পর বিভাগে কাগজপত্রগুলো আসলে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়, যেন তারা সেগুলো তুলে নেয়। অনেকে তুলে নিলেও কিছু কাগজ থেকে যায়। এদিকে শিক্ষার্থীদেরও গাফিলতি আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।<br />  </p>