<p>শিক্ষায় ৩১ বছরের বৈষম্যের অবসান চেয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বৈষম্য নিরসনে সাত দফা দাবিতে রাজধানীর গণি রোডে অবস্থিত শিক্ষা ভবনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে সমাবেশ করে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (বামাউশি) সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ।</p> <p>সমাবেশে বক্তব্য দেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. লিয়াকত আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুল হক খোকন, বামাউশি কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের মহাসচিব মো. অহিদুর রহমান প্রমুখ। </p> <p>বক্তারা বলেন, ‘৩১ বছর ধরে অনাদর, অবজ্ঞা এবং বৈষম্যের ছায়ায় মাথা নিচু করে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে তার ফলে আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধান উপদেষ্টা এবং শিক্ষা উপদেষ্টার দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে আমাদের এই বৈষম্য দূর করা সম্ভব। আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে শিক্ষা খাতে ৩১ বছরের বঞ্চনা ও বৈষম্যের অবসান ঘটবে এবং এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।<br />  <br /> বৈষম্য নিরসনে বামাউশি কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- (ক) পদোন্নতির মাধ্যমে জেলা শিক্ষা অফিসারের শতভাগ পদে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদায়ন করতে হবে এবং ষষ্ঠ গ্রেড প্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের চলতি দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।<br /> (খ) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের শূন্য পদে সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং বিভিন্ন প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যথাযথ পদোন্নতি ও পদায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। <br /> (গ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব দপ্তর, অধিদপ্তর এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক পদে যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন অধিদপ্তর/দপ্তরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি ও পদায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। <br /> (ঘ)  আমরা আমাদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মান করি। তবে আমরা জোর দিয়ে বলছি, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে থাকবেন এবং তাদের দিয়ে প্রশাসনিক কাজ করানো যাবে না। তা ছাড়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হার ৯৭%, যেখানে সরকারি স্কুলের ৩% শিক্ষক বাকি ৯৭% শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পেলে চরম বৈষম্য সৃষ্টি হয়। তাই, মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের কোনো বিকল্প নেই।<br /> (ঙ) ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর কতিপয় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তেলবাজির মাধ্যমে গত ১৫ বছর ধরে ঢাকার বিভিন্ন স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করে রেখেছে। তাদের মফস্বল এলাকায় বদলি করে এবং জেলা শিক্ষা অফিসার পদে কর্মরতদের মূল পদে ফিরিয়ে নিতে হবে। বৈষম্যের শিকার প্রধান শিক্ষকদের ঢাকার স্কুলে পদায়ন করতে হবে।<br /> (চ) মাউশির নিয়োগ বিধি-২০২১ সংশোধন করে সকল পদে ৮০% পদোন্নতি ব্যবস্থা করতে হবে, পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিএড ডিগ্রি বাতিল করতে হবে, সব পদের ফিডার সময়সীমা কমিয়ে ৪ বছর করতে হবে, অধিদপ্তর/দপ্তর, সরকারি কলেজ, সরকারি স্কুল এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয়  শ্রেণির পদ সৃষ্টি করতে হবে। <br /> (ছ) একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।</p>