<p>কোটা সংস্কার ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিরা সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ি এলাকা প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (কুবি) জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। অবরোধ চলাকালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন উত্তেজিত আন্দোলনকারীরা। এ সময় চার পুলিশ সদস্য আহত হন।</p> <p>মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে কুবির প্রধান ফটকে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে জমায়েত হন। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিকেল ৩টা ৪২ মিনিটে মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এই অবরোধ শেষ হয় বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে। দীর্ঘ সময় ধরে মহাসড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী লেনে অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। </p> <p>সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা ও বিচারের দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন কুমিল্লা পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, সিসিএন শিক্ষা পরিবারের শিক্ষার্থীসহ জেলার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। </p> <p>আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ নগরীর চমছমব্রিজ অভিমুখ থেকে রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে কুমিল্লা জিলা স্কুলের এক শিক্ষার্থী আহত হয়।</p> <p>এদিন দুপুর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় গেটের সামনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঁচটি হল থেকে মিছিল নিয়ে আসলে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও আসেন। ক্যাম্পাসে অন্য শিক্ষার্থীরা প্রবেশের সময় প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে তর্ক হয়। এরপর সেখান থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।</p> <p>মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি। এসব হামলার বিচার চাই।’  </p> <p>এ বিষয়ে হাইওয়ে ময়নামতি ক্রসিং থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভমুখী লেনে অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেওয়ায় এখন যানবাহন চলাচল করছে।</p> <p>কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, শিক্ষার্থীরা যতক্ষণ ক্যাম্পাসে ছিল ততক্ষণ কন্ট্রোল করতে পেরেছি। অনেক বহিরাগত ঢুকেছিল ক্যাম্পাসে। প্রক্টরিয়াল বডি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তখন তাদের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয় আমাদের। এখন তারা মহাসড়কের দিকে যাচ্ছে। আমি পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ করে তিনি বলেন, কোনো নাশকতামূলক কাজ যেন শিক্ষার্থীরা না করে।  </p> <p>কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান ঘটনার বলেন, যেহেতু আন্দোলনকারীরা সবাই শিক্ষার্থী, তাদের প্রতি সহনশীল আচরণ করেছি। তারপরও গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃকপক্ষকে জানানো হয়েছে।</p>