<p>সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে দেশব্যাপী ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিরর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক একটানা চার ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ী এলাকায় এই অবরোধ করা হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। </p> <p>বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া এ কর্মসূচি শেষ হয় বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে। ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।</p> <p>দীর্ঘক্ষণ মহাসড়ক অবরোধের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে চালক ও যাত্রীরা। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৩টায় অবরোধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত মহাসড়কের উভয়মুখী লেনে অন্তত ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ায় যানচলাচল শুরু হলেও যানবাহনের জট লাগায় ধীরগতিতে গাড়ি চলাচল করছে।</p> <p>আন্দোলন চলাকালে কয়েকবার বৃষ্টি নামলেও শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজেই আন্দোলন চালিয়ে যান। এ সময় ‘আমার সোনার বাংলায়, কোটা প্রথার ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে,’ ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই করো একসাথে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুর আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। তা ছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলতে দেখা যায়।</p> <p>কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ বর্ষের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, ‘একই দেশ, একই জাতি, একই ভাষা তবুও কেনো এত বৈষম্য থাকবে। যতই ঝড়-বৃষ্টি-তুফান হোক, এই আন্দোলন চালিয়ে যাব যত দিন না পর্যন্ত এই বৈষম্য দূর হবে।’</p> <p>গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের রেজাউল রহমান আয়াত বলেন , ‘কোটা সম্পূর্ণ বাতিল না করলেও কোটা সংস্কার করা হোক। আমরা এই বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি আদায় না করে রাজপথ ছাড়ব না।’  </p> <p>অবরোধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলন সমন্বয়কদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘আজকে আমাদের অবরোধ ছিল সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিন্তু আবহাওয়াজনিত কারণে আমাদের আন্দোলন এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী কর্মসূচির অনলাইনে জানিয়ে দেব।’<br />   <br /> যানজটে আটকা পড়া চট্টগ্রাম অভিমুখী ট্রাকচালক কামাল মিয়া বলেন, ‘মালামাল নেওয়ার জন্য প্রতিদিনই এই রাস্তা দিয়ে যেতে হয়। গতকালও দীর্ঘক্ষণ জ্যামে আটকা ছিলাম। সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলে আমাদের আর সাধারণ জনগণ সবার জন্যই উপকার হইতো।’</p> <p>ঢাকাগামী একটি বাসের যাত্রী হিমেল মাহমুদ বলেন, ‘এভাবে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে আমরা সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। সবার জন্যই সমস্যা হচ্ছে। আমরা এর এই দ্রুত সমাধান চাই।’ <br />  <br /> ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, ‘একটানা চার ঘণ্টা অবরোধের কারণে মহাসড়কে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যান চলাচল শুরু হলেও দীর্ঘ গাড়ির জট লাগায় কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। আমরা যানজট পুরোপুরি নিরসনে কাজ করছি।’<br /> <br /> এর আগে ৪, ৭ ও ৮ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একই স্থান তিন ঘণ্টা ও চার ঘণ্টা করে অবরোধ করে রেখেছিলেন শিক্ষার্থীরা।</p>