<p>ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করার মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা করে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়ার অগ্রগতি জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে আল্টিমেটাম দিয়েছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।</p> <p>আজ সোমবার (৬ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিজ খান।</p> <p>লিখিত বক্তব্যে গত ফেব্রুয়ারিতে বিভাগের এক শিক্ষার্থী ও রাজধানীর অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীর নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠন ও দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয় উল্লেখ করে বলা হয়, ‘দুই সপ্তাহ সময় বেধে দেওয়া হলেও আজ দুই মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তদন্তের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অন্য দুইটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা করতে পারেনি।’</p> <p>তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করার মাধ্যমে ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘বিশেষ কোনো মহল বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে অথবা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা কমে গেলে লঘুদণ্ড দিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’</p> <p>তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে এই ঘটনায় অগ্রগতি আমাদেরকে জানাতে হবে। দৃশ্যমান কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হলে নিপীড়িত শিক্ষার্থীর ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে আমরা বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।’</p> <p>লিখিত বক্তব্যে বিচারপ্রার্থী নারী শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থার বিষয় প্রশাসনকে মনে রাখতে হবে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘বিচার চলাকালীন সময়ে একজন বিচারপ্রার্থী নারী শিক্ষার্থীকে নানা ধরনের মানসিক অস্বস্তির মধ্য দিয়ে একেকটি দিন কাটাতে হয়। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিচারিক প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত না করে প্রশাসনকে সংবেদনশীলতার পরিচয় দিতে হবে।’</p> <p>নিপীড়নের সত্যতা পাওয়া গেলে অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে ফৌজদারী ব্যবস্থা ও এর সকল ব্যায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।</p>