<p>উন্নয়নের নামে গত সাড়ে ১৫ বছরে অত্যধিক ঋণ করেছে হাসিনা সরকার। প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পেই বেশি ঋণ করা হয়েছে। ফলে প্রকল্প চালু হলেও তা থেকে আশানুরূপ ফল আসছে না। ফলে ঋণ করেই এখন ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে।</p> <p><img alt="ঋণের চেয়ে পরিশোধ বেশি" height="240" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/28/1732814805-4d385205cae336fd5ebc3a1fd30bbc54.jpg" style="float:left" width="400" />চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে যে পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ এসেছে, তার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবরে) বৈদেশিক ঋণ ছাড় হয়েছে ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলার। অথচ এই সময় বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। যেখানে গত অর্থবছরে ১১০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৭ মিলিয়ন ডলার চুরি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/29/1732852404-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৭ মিলিয়ন ডলার চুরি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/11/29/1451888" target="_blank"> </a></div> </div> <p>গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৩৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। যার মধ্যে শুধু আসল পরিশোধই বেড়েছে ২৬ কোটি ডলার। তবে চলতি অর্থবছরে কমে গেছে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি।</p> <p>ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে পদ্মা রেল সংযোগ, মেট্রো রেল ও কর্ণফুলী টানেলসহ বেশ কিছু বড় প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে। যার ফলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে আলাদা চাপ তৈরি হয়েছে। অথচ মেট্রো রেল বাদে পদ্মা রেল সংযোগ ও কর্ণফুলী টানেল থেকে তেমন রিটার্ন আসছে না, যা আয় হচ্ছে তার চেয়ে বেশি মেইনটেন্যান্সে খরচ হয়ে যাচ্ছে। সরকারকে নিজের তহবিল থেকে এসব প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অরাজকতা প্রতিরোধে কাজ করছে সেনাবাহিনী : প্রেস ব্রিফিং" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/29/1732851139-503a00b5c748defcb5501aa166601f9a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অরাজকতা প্রতিরোধে কাজ করছে সেনাবাহিনী : প্রেস ব্রিফিং</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/29/1451886" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ি অর্থবছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড ৩৩৫ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৬৮ কোটি ডলার বেশি। এর আগে কোনো অর্থবছরে সরকারকে এত ঋণ পরিশোধ করতে হয়নি।</p> <p>সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৬৭ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করেছিল। মূলত সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। গত অর্থবছরে শুধু সুদ পরিশোধ বেড়েছে ৪১ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে এই ঋণ পরিশোধের পরিমাণ সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।</p> <p>এদিকে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ২৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯০ শতাংশ।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নতুন-পুরনো আলুর সরবরাহ পর্যাপ্ত, তবুও ৫ বছরের সর্বোচ্চ দাম" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/29/1732850521-c5662d641ea6b4d38be8aa0a81fa2775.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নতুন-পুরনো আলুর সরবরাহ পর্যাপ্ত, তবুও ৫ বছরের সর্বোচ্চ দাম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/11/29/1451885" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ইআরডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সরকারের সময় করা ঋণচুক্তির প্রস্তাবগুলো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে পর্যালোচনা করছে। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঋণচুক্তি সম্পন্ন হচ্ছে না। তবে পর্যালোচনা শেষে প্রস্তাবিত ঋণের প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং তখন লক্ষ অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি আদায় হবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা।</p> <p>কর্মকর্তারা আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-সহ বহুপক্ষীয় এবং বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ ও বাজেট সহায়তার প্রাথমিক আশ্বাস দিয়েছে। চলতি নভেম্বরেই বেশ কয়েকটি প্রকল্পে ঋণচুক্তি হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দুই সংস্কার কমিশনের কাছে প্রস্তাবের পাহাড়, আলোচনা করেই সুপারিশ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/29/1732849203-2639a6f03e6174d81a31976f0f61fb21.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দুই সংস্কার কমিশনের কাছে প্রস্তাবের পাহাড়, আলোচনা করেই সুপারিশ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/29/1451881" target="_blank"> </a></div> </div> <p>প্রকল্প প্রস্তুত ও কাজের অগ্রগতি না হওয়ার কারণে ঋণের প্রতিশ্রুতি এবং অর্থছাড় কমেছে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরী। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রকল্পের আওতায় অর্থ ছাড় হয়ে থাকে কাজের অগ্রগতির ওপর। যতটুকু কাজ হয়েছে সেটির ওপরই উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থ ছাড় করে থাকে। যেহেতু এই দুই মাস আন্দোলনের কারণে কাজ হয়নি, তাই ঋণের অর্থ ছাড়ও কম হয়েছে। কাজের অগ্রগতি বাড়লে অর্থ ছাড়ও বাড়বে। এটি সাময়িক।’ </p> <p>জানা গেছে, বাংলাদেশকে বাজারভিত্তিক ঋণের জন্য উচ্চ সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সিং রেট (এসওএফআর) বেড়েছে। বর্তমানে এসওএফআর ৫ শতাংশের বেশি, যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির আগে ১ শতাংশের কম ছিল। আবার বাংলাদেশের বাজারভিত্তিক ঋণও ক্রমাগত বাড়ছে। এ কারণে বাংলাদেশকে এখন সুদ বাবদ বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে।</p> <p>ডলার সংকটের এই মুহূর্তে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ অর্থনীতিতে বড় একটি চাপ তৈরি করছে। সরকার কি ঋণ নিয়েই বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ করলে তো ঋণের বোঝা বাড়তেই থাকবে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দুই সংস্কার কমিশনের কাছে প্রস্তাবের পাহাড়, আলোচনা করেই সুপারিশ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/29/1732849203-2639a6f03e6174d81a31976f0f61fb21.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দুই সংস্কার কমিশনের কাছে প্রস্তাবের পাহাড়, আলোচনা করেই সুপারিশ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/29/1451881" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এ ক্ষেত্রে ঋণগুলোর ব্যবহারে উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। ঋণ ব্যবহার করে রিটার্ন যাতে সময়মতো পাওয়া যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। আর বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে তো বৈদেশিক মুদ্রাই লাগবে। তাই বৈদেশিক মুদ্রা আসার ক্ষেত্রে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য পলিসিগুলো ঠিক রাখা দরকার। বৈদেশিক মুদ্রা না এলে তো পরিশোধে চাপ পড়বেই।’</p>