<p>টানা দেড় মাস বন্ধ থাকার পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে রেলপথে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে পুনরায় শুরু হয় রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ১৯ জুলাই থেকে দুই দেশের মধ্যে রেলপথে পণ্য পরিবহন এবং যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রাখে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। </p> <p>এদিন ভারত থেকে রেলযোগে দুইটি চালানে দুই হাজার ৪৬০ টন জিপসাম সার এবং ৬১টি ট্রাক্টর আমদানি হয়েছে। তবে এখনো বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপারের ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। </p> <p>বন্দর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথে ভারতের সঙ্গে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্যসহ পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তবর্তী সরকার ব্যবস্থায় স্বাভাবিক হয় দেশ। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাণিজ্য ও যাত্রী চলাচলের দাবিতে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে ১২ আগস্ট একটি চিঠি দেয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সাড়া না দেওয়ায় বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি বাংলাদেশ নির্ভর ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে ভারত সরকার টানা দেড় মাস পর বৃহস্পতিবার রেলপথে পণ্য পরিবহন সেবা চালু করেছে।</p> <p>আমদানিকারক সাজেদুর রহমান বলেন, এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেলপথে পাথর, জিপসাম ও সিমেন্ট তৈরির সামগ্রী আমদানির পাশাপাশি গার্মেন্টস, কেমিক্যাল, মোটরকারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। ভারতের কলকাতা থেকে সড়ক পথে ট্রাকে পণ্য পরিবহনে ৫-৭ দিন সময় লেগে যায়। সেখানে রেলপথে ৩-৪ ঘণ্টায় বেনাপোল বন্দরে পণ্য পৌঁছে যায়।<br />  <br /> যাত্রীবাহী ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ চালুর দাবি জানিয়ে বেনাপোল ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্টাস অ্যান্ড এক্সপোর্টাস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বেনাপোল দিয়ে রেলপথে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েন। পুনরায় এ বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ব্যবসার কাজে প্রায়ই ভারতে যেতে হয় ব্যবসায়ীদের। ভিসা বন্ধ থাকায় ভারতে যাতায়াতে অসুবিধায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।</p> <p>বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. সাইদুজ্জামান জানান, বেনাপোল দিয়ে রেলপথে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহন চালুর জন্য গত মাসের ১২ আগস্ট ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় রেলপথে পণ্য আমদানি চালু হয়েছে। কিন্তু যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রেখেছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। খুব দ্রুতই যাত্রী চলাচল চালু হবে বলে জানান তিনি।</p> <p>বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির জানান, দীর্ঘদিন রেলপথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর পুনরায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু হয়েছে এবং পণ্য দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।</p>